Uncategorized

“ব্যবসায় উদ্যোগ” এসএসসি ২০২১ চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

Rate this post
"ব্যবসায় উদ্যোগ" এসএসসি ২০২১ চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

 ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের “ব্যবসায় উদ্যোগ” ৪র্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট। 

অ্যাসাইনমেন্ট নম্বরঃ ৩
অধ্যায়ঃ দ্বিতীয় ও তৃতীয়
অধ্যায়ের শিরোনামঃ ব্যবসায় উদ্যোগ ও উদ্যোক্তা

অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনামঃ ব্যবসায় উদ্যোগ সৃষ্টিতে আত্মকর্মসংস্থানের ভূমিকা নিরূপণ।


নিধারিত কাজঃ

"ব্যবসায় উদ্যোগ" এসএসসি ২০২১ চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর


নমুনা উত্তরঃ

ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণাঃ

যে ব্যক্তি দৃঢ় মনােবল ও সাহসিকতার সাথে ফলাফল অনিশ্চিত জেনেও ব্যবসায় স্থাপন করেন ও সফলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করেন তিনি ব্যবসায় উদ্যোক্তা বা শিল্পোদ্যোক্তা। ব্যবসায় উদ্যোগ (Entrepreneurship) এবং ব্যবসায় উদ্যোক্তা (Entrepreneur) শব্দ দুটি একটি অন্যটির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। যিনি ব্যবসায় উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনিই ব্যবসায় উদ্যোক্তা। অন্যদিকে মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে একটি ব্যবসায় স্থাপনের ধারণা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে ব্যবসায়টি স্থাপন ও সফলভাবে পরিচালনাই ব্যবসায় উদ্যোগ। বিশদভাবে বলতে গেলে, ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে বুঝায়, লাভবান হওয়ার আশায় লােকসানের সম্ভাবনা জেনেও ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া ও সফলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করা। 

উদ্যোগ যেকোন বিষয়ের ব্যাপারেই হতে পারে কিন্তু লাভের আশায় ঝুঁকি নিয়ে অর্থ ও শ্রম বিনিয়ােগ করাই হলাে ব্যবসায় উদ্যোগ। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, রাকিব সাহেব বাঁশ ও বেত দিয়ে সুন্দর সুন্দর জিনিস তৈরী করতে পারাে। এখন নতুন এক ধরনের বেতের চেয়ার দেখে তিনি সেটা বানানাের চেষ্টা করলেন। এটা তার উদ্যোগ। এখন তিনিত যদি অর্থ সংগ্রহ করে বাঁশ ও বেতের সামগ্রী তৈরির দোকান স্থাপন করে সফলভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করাে, তখন এটি হবে ব্যবসায় উদ্যোগ।

ব্যবসায় উদ্যোগের বৈশিষ্ট্য:
ব্যবসায় উদ্যোগের ধারণা বিশ্লেষণ করলে এর বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। একজন উদ্যোক্তার সকল কার্যাবলিকেই উদ্যোগ বলা হয় যার প্রাথমিক লক্ষ্য হল নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। আত্মকর্মসংস্থানকে  প্রভাবিত করে ব্যবসায় উদ্যোগের এমন ৪টি বৈশিষ্ট্য উল্ল্যেখ করা হল:
  • ব্যবসায় উদ্যোগ হচ্ছে সৃজনশীলতা ও নৈপুণ্য প্রদর্শনের একটি ক্ষেত্র। ব্যবসায় উদ্যোগ প্রকৃতপক্ষে একটি উদ্ভাবনকে ধারণ করে সৃষ্ট হয় এবং উক্ত উদ্ভাবনকে কর্ম ক্ষেত্রে প্রয়োগের চেষ্টা করে।
  • ব্যবসায় উদ্যোগের সফলতা নির্ভর করে উদ্যোক্তার সাহস, মেধা ও সাংগঠনিক ক্ষমতা প্রদর্শনের উপর। সাহসী ও পরিশ্রমী ব্যক্তি ব্যবসায় উদ্যোগের মাধ্যমে নিজের আত্মকর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেন।
  • এটি ব্যবসায় বা শিল্প স্থাপনের একটি কর্মপ্রচেষ্টা বা পরিকল্পনা অর্থাৎ নতুন কিছু সৃষ্টির পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ব্যবসায় উদ্যোগ এর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। 
  • ব্যবসা উদ্যোগের মাধ্যমে উদ্যোক্তা শুধু নিজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে না। পাশাপাশি সে অন্যের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করে থাকেন।
    আত্মকর্মসংস্থানের ধারণাঃ
    নিজস্ব পুঁজি অথবা ঋণ করা স্বল্প সম্পদ, নিজস্ব চিন্তা, জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা ও দক্ষতাকে। কাজে লাগিয়ে নূন্যতম ঝুঁকি নিয়ে আত্ম প্রচেষ্টায় জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থাকে আত্মকর্মসংস্থান বলে। জীবিকা অর্জনের বিভিন্ন পেশার মধ্যে আত্মকর্মসংস্থান একটি জনপ্রিয় পেশা। আমাদের চারপাশে এমন অনেক আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মকান্ড দেখা যায়। কলেজ গেইটের পাশে যে চানাচুর বা আমড়া বিক্রি করে সেটিও তাদের আত্মকর্মসংস্থান। এরকম নানাবিধ জীবিকার উপায় আত্মকর্মসংস্থানের ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হাঁস-মুরগি পালন, নার্সারি, ফুলের চাষ, বেতের সামগ্রি তৈরি, টেইলারিং ও মৌমাছি চাষ ইত্যাদি আত্মকর্মসংস্থানের আওতাভুক্ত।
    জামালপুরের আমিনুল ইসলাম কয়েক বছর ধরে ছোট এটি প্রতিষ্ঠানে কম বেতনে চাকরি করে। অল্প টাকায় সংসার চালনো কষ্টসাধ্য তাই সে চিন্তা করল চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের যে জমি রয়েছে তাতে কৃষিকাজ করবে। আমিনুল কৃষিকাজে খুব দক্ষ না হলেও অনেক কিছুই সে জানে। তাই সে তার মেধা ও জমানো কিছু টাকাকে পুজি করে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ শুরু করল। মাস দুই এক পর সে স্থানীয় বাজারে ভালো দামে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে শাকসবজি বিক্রি করে অনেক মুনাফা অর্জন করল। আমিনুল আত্মকর্মসংস্থানে মাধ্যমে এখন সাবলম্বী। 
    আত্মকর্মসংস্থান ও উদ্যোগের মধ্যে সম্পর্ক:
    ব্যবসায় উদ্যোগের সাথে আত্মকর্মসংস্থানের সম্পর্ক খুব নিবিড়। আত্মকর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি নিজের কর্মসংস্থানের চিন্তা করে কাজে হাত দেন। তিনি সাধারণত প্রচলিত যে কোন কর্মকে জীবিকার উপায় হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। যার মধ্যে সাধারণত নতুনত্ব বা সৃজনশীলতা থাকে না। নিজের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ও মুনাফা অর্জনই আত্মকর্মসংস্থানকারীর প্রধান উদ্দেশ্য। অন্যদিকে একজন উদ্যোক্তা নিজের কর্মসংস্থান ও আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য কাজ শুরু করলেও তিনি নতুন পণ্য বা সেবা সামগ্রীর উৎপাদন করে ব্যবসায় শুরু করেন, উক্ত পণ্যের বাজার চাহিদা সৃষ্টি করেন, আবার বাজারে প্রচলিত দ্রব্য সামগ্রী দিয়ে ব্যবসায় শুরু করলেও অল্প দিনের মধ্যে তিনি উদ্দ্যম, সাহস ও সৃজনশীলতা দিয়ে অনেকের মধ্যে সাড়া জাগাতে সক্ষম হন। উদ্যোক্তার আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য হলাে তিনি নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টির স্বপ্ন নিয়ে তার ব্যবসায় শুরু করেন। একজন আত্মকর্মসংস্থানকারী ব্যক্তি তখনই একজন উদোক্তায় পরিণত হবেন, যখন তিনি নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সমাজের আরও কয়েকজনের কর্মসংস্থানের চিন্তা নিয়ে কাজ শুরু করেন, ঝুঁকি আছে জেনেও এগিয়ে যান এবং একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তােলেন। সেক্ষেত্রে সকল ব্যবসায় উদ্যোক্তাকে আত্মকর্মসংস্থানকারি বলা গেলেও সকল আত্মকর্মসংস্থানকারিকে ব্যবসায় উদ্যোক্তা বলা যায় না।
    ব্যবসায় উদ্যোগের কার্যাবলী:
    ব্যবসায় উদ্যোগ সাধারণ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থেকে আলাদা। ব্যবসায় উদ্যোগের সাথে নতুনত্ব, সৃজনশীলতা ও সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি জড়িত। ব্যবসায় উদ্যোক্তা যা করেন তাই ব্যবসায় উদ্যোগ কার্যাবলি। ব্যবসায় উদ্যোগের কার্যাবলি বহুমুখী। এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাকে তিন ধরনের কাজ পরিচালনা করতে হয়। প্রথমত, ব্যবসায় সম্পর্কিত তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করতে হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে সংগৃহিত তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে বিনিয়ােগ সিদ্ধান্ত, মুনাফা পরিকল্পনা, সংগৃহিত তথ্য ও উপাত্ত পুণঃমূল্যায়ন করা হয়। তৃতীয় পর্যায়ে ব্যবসায় উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজগুলাে সম্পাদন করতে হয়। নিন্মে ব্যবসায় উদ্যোগের ৮টি কার্যাবলী উল্ল্যেখ করা হল: 
    • উদ্যোগ গ্রহণ করা। 
    • উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবার জন্য সংগৃহিত তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করা। 
    • ঝুকি মােকাবিলা করার সাহস।
    • উৎপাদনের উপকরণ অর্থাৎ ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠনকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নতুন পণ্য বা সেবা আবিষ্কার করা। 
    • উৎপাদিত পণ্য-দ্রব্য বা সেবা সামগ্রীর বাজার সৃষ্টি করা। 
    • মূলধন সংগ্রহ করা এবং মূলধন সংগ্রহের উৎস ও কৌশল জানা।
    • ব্যবসায়িক সম্পর্ক, বাজার সম্প্রসারণ, নতুন নতুন উপযােগ সৃষ্টি করা। 
    • পণ্যের মান, পণ্যের মূল্য নির্ধারণ ও বিক্রয়ােত্তর সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সজাগ দৃষ্টি রাখা। 

      ব্যবসায় উদ্যোগ ব্যবসায় বা শিল্প স্থাপনের একটি কর্ম প্রচেষ্টা বা পরিকল্পনা। নতুন কিছু সৃষ্টির পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ব্যবসায় উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। ব্যবসায় উদ্যোগকে একটি বিনিয়ােগ সিদ্ধান্ত হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যায়। উদ্যোক্তা শুধু নিজের কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি করে না, পাশাপাশি সে অন্যের জীবিকার ব্যবস্থা করতে থাকেন। ব্যবসায় উদ্যোগের ফলে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি উদ্যোক্তাগণের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

      Rimon

      This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

      মন্তব্য করুন

      Back to top button