খাদ্যে ভেজাল সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ
খাদ্যে ভেজাল
খাবার বা পানীয়ের সাথে বিভিন্ন পদার্থের মিশ্রণ ঘটিয়ে তার খাদ্যগুণ বা বিশুদ্ধতাকে নষ্ট করে তােলার নামই হলাে খাদ্যে ভেজাল। সাধারণত অসৎ এবং লােভী ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের জন্য খাদ্যে ভেজাল মেশায়। আসলে ভেজাল কর্মকাণ্ডের পরিসর অনেক বৃহৎ। সাধারণত কৃষিজ পণ্যের সাথে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত করে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার ধারণা থেকেই মানুষের মনে ভেজালের ধারণা জন্মে। মানুষ লক্ষ করল যে, কার্বাইড ব্যবহার করে দীর্ঘদিন খাদ্যদ্রব্য তাজা রাখা যায় কিংবা ফরমালিন ব্যবহার করে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। কিন্তু তারা রাসায়নিক পদার্থের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তা করেনি। কার্বাইড, ফরমালিনের মতাে রাসায়নিক পদার্থগুলাে যেকোনাে খাদ্যের সাথে মিশ্রিত থাকলে ঐ খাদ্যদ্রব্যের পুষ্টি উপাদান বিষাক্ত হয়ে যায়, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। বর্তমানে হােটেল বা রেস্তোরায় ভালাে খাবারের সাথে বাসি বা পচা খাবার মিশিয়ে ক্রেতাদের পরিবেশন করা হয়। মাছ ও শাকসবজি সতেজ দেখাতে এবং অনেক দিন সংরক্ষণ করতে এগুলােতে রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে ভেজাল করা হয়। বেকারি ও কনফেকশনারি দ্রব্যও বিষাক্ত উপাদান মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয়। এমনকি ফলমূল, দুধ এবং কোমল পানীয়তেও ভেজাল মেশানাে হয়। মুড়িকে আরও সাদা এবং বড় করতে ইউরিয়া ব্যবহার করা হয়। শরবত এবং পানীয়তেও কৃত্রিম রং ব্যবহার করা হয়। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে পুরাে জাতি রােগাক্রান্ত হতে শুরু করবে। ফলে সমাজের কোনাে মা সুস্থ শিশু জন্ম দিতে পারবে না। তাই যারা খাদ্য ভেজালের সাথে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি প্রদান করতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে আরও সতর্ক হতে হবে এবং প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে এর ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।