 |
সূরা আল-ফাজ্র (Al-Fajr) বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ |
সূরা আল-ফাজ্র (Al-Fajr) (আরবিঃ سورة الفجر) পবিত্র কুরআন শরীফের ৮৯ তম সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। সূরাটি মাক্কী সূরার অন্তর্ভুক্ত। আয়াত সংখ্যা ৩০।
পূর্ববর্তী সূরাঃ সূরা আল-গাশিয়াহ্
পরবর্তী সূরাঃ সূরা আল-বালাদ
নামকরণ ও বিষয়বস্তু
সূরা আল-ফাজ্র এর নামকরণ করা হয়েছে এর প্রথম শব্দ ‘আল ফাজ্র’ থেকে। যার অর্থ প্রভাতকাল। সূরাটিতে তিনটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হয়েছে।
প্রথম বিষয়, আল্লাহ্পাক পাঁচটি বস্তুর শপথ করে বলেছেন তিনি সকল বিষয় সম্পর্কে জানেন। এর প্রমাণ হিসাবে তিনি বিগত যুগের দুর্ধর্ষ ও শক্তিশালী তিনটি জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার কাহিনী পেশ করেছেন।
দ্বিতীয় বিষয়, সম্মান বা অসম্মানের মানদণ্ড যে সম্পদের প্রাচুর্য বা অপ্রাচুর্যের নির্ভর করে না সে বিষয়ে বলা হয়েছে।
তৃতীয় বিষয়, কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে সকলকে একত্রিত করা হবে এবং সকলের কাজের হিসাব নেওয়া হবে। বান্দাকে তার কর্মের যথাযোগ্য প্রতিদান ও প্রতিফল দান করবেন।
সূরা আল-ফাজ্র-এর আয়াতসমূহ বাংলা অর্থসহ
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
(1
وَالْفَجْرِ
ওয়াল ফাজর
শপথ ঊষার
(2
وَلَيَالٍ عَشْرٍ
ওয়া লায়া-লিন ‘আশর
শপথ দশ রাতের,
(3
وَالشَّفْعِ وَالْوَتْرِ
ওয়াশশাফা’ই ওয়াল ওয়াত্র
শপথ জোড় ও বিজোড়ের
(4
وَاللَّيْلِ إِذَا يَسْرِ
ওয়াল লাইলি ইযা-ইয়াছ্র
এবং শপথ রাত্রির যখন তা গত হতে থাকে
(5
هَلْ فِي ذَٰلِكَ قَسَمٌ لِّذِي حِجْرٍ
হাল ফী যা-লিকা কাছামুল লিযী হিজর
এর মধ্যে আছে শপথ জ্ঞানী ব্যক্তির জন্যে।
(6
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِعَادٍ
আলাম তারা কাইফাফা ‘আলা রাব্বুকা বি‘আ-দ।
আপনি কি লক্ষ্য করেননি, আপনার পালনকর্তা আদ বংশের ইরাম গোত্রের সাথে কি আচরণ করেছিলেন,
(7
إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ
ইরামা যা-তিল ‘ইমা-দ
ইরাম গোত্রের প্রতি, যারা অধিকারী ছিল সুউচ্চ প্রাসাদের
(8
الَّتِي لَمْ يُخْلَقْ مِثْلُهَا فِي الْبِلَادِ
আল্লাতী লাম ইউখলাকমিছলুহা-ফিল বিলা-দ
যার সমতুল্য অন্য কোন নগর নির্মিত হয়নি
(9
وَثَمُودَ الَّذِينَ جَابُوا الصَّخْرَ بِالْوَادِ
ওয়া ছামূদাল্লাযীনা জা-বুসসাখরা বিল ওয়া-দ।
এবং সামুদ গোত্রের সাথে, যারা উপত্যকায় পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল।
(10
وَفِرْعَوْنَ ذِي الْأَوْتَادِ
ওয়া ফির‘আউনা যীল আওতা-দ।
এবং বহু সৈন্য শিবিরের অধিপতি ফির‘আউনের প্রতি
(11
الَّذِينَ طَغَوْا فِي الْبِلَادِ
আল্লাযীনা তাগাও ফিল বিলা-দ।
যারা দেশে সীমালঙ্ঘন করেছিল।
(12
فَأَكْثَرُوا فِيهَا الْفَسَادَ
ফাআকছারূ ফীহাল ফাছা-দ।
অতঃপর সেখানে বিস্তর অশান্তি সৃষ্টি করেছিল।
(13
فَصَبَّ عَلَيْهِمْ رَبُّكَ سَوْطَ عَذَابٍ
ফাসাব্বা ‘আলাইহিম রাব্বুকা ছাওতা ‘আযা-ব।
অতঃপর আপনার পালনকর্তা তাদেরকে শাস্তির কশাঘাত করলেন।
(14
إِنَّ رَبَّكَ لَبِالْمِرْصَادِ
নিশ্চয় আপনার পালকর্তা সতর্ক দৃষ্টি রাখেন।
(15
فَأَمَّا الْإِنسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ
ফাআম্মাল ইনছা-নুইযা-মাবতালা-হু রাব্বুহু ফাআকরামাহূওয়া না‘‘আমাহূ ফাইয়াকূলু রাববীআকরামান।
মানুষ এরূপ যে, যখন তার পালনকর্তা তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর সম্মান ও অনুগ্রহ দান করেন, তখন বলে, আমার পালনকর্তা আমাকে সম্মান দান করেছেন।
(16
وَأَمَّا إِذَا مَا ابْتَلَاهُ فَقَدَرَ عَلَيْهِ رِزْقَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَهَانَنِ
ওয়া আম্মা-ইযা-মাবতালা-হু ফাকাদারা ‘আলাইহি রিঝকাহূ ফাইয়াকূলুরাববী- আহা-নান।
এবং যখন তাকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর রিযিক সংকুচিত করে দেন, তখন বলেঃ আমার পালনকর্তা আমাকে হেয় করেছেন।
(17
كَلَّا ۖ بَل لَّا تُكْرِمُونَ الْيَتِيمَ
কাল্লা-বাল্লা-তুকরিমূনাল ইয়াতীম।
না কখনই না, বরং তোমরা এতীমকে সম্মান কর না।
(18
وَلَا تَحَاضُّونَ عَلَىٰ طَعَامِ الْمِسْكِينِ
ওয়া লা-তাহাদ্দূ না ‘আলা-তা‘আ-মিল মিছকীন।
এবং তোমরা অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না
(19
وَتَأْكُلُونَ التُّرَاثَ أَكْلًا لَّمًّا
ওয়া তা’কুলূনাত তুরা-ছা আকলাল্লাম্মা-
এবং তোমরা উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য সম্পদ সম্পূর্ণ রূপে আহার করে থাকো
(20
وَتُحِبُّونَ الْمَالَ حُبًّا جَمًّا
ওয়া তুহিব্বুনাল মা-লা হুব্বান জাম্মা-
এবং তোমরা ধন-সম্পদকে অত্যধিক ভালবেসে থাক
(21
كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا
কাল্লাইযা-দুক্কাতিল আরদুদাক্কান দাক্কা-
এটা সংগত নয়। পৃথিবীকে যখন চূর্ণ বিচূর্ণ করা হবে,
(22
وَجَاءَ رَبُّكَ وَالْمَلَكُ صَفًّا صَفًّا
ওয়া জা-আ রাব্বুকা ওয়াল মালাকুসাফফান সাফফা-।
এবং আপনার পালনকর্তা ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত হবেন,
(23
وَجِيءَ يَوْمَئِذٍ بِجَهَنَّمَ ۚ يَوْمَئِذٍ يَتَذَكَّرُ الْإِنسَانُ وَأَنَّىٰ لَهُ الذِّكْرَىٰ
ওয়া জী-আ ইয়াওমাইযিম বিজাহান্নামা ইয়াওমাইযিইঁ ইয়াতাযাক্কারুল ইনছা-নুওয়া আন্না-লাহুযযিকরা-।
সেদিন জাহান্নামকে আনয়ন করা হবে এবং সেদিন মানুষ উপলদ্ধি করবে, কিন্তু এই উপলদ্ধি তার কি করে কাজে আসবে?
(24
يَقُولُ يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي
ইয়াকূ লুইয়া-লাইতানী কাদ্দামতুলিহায়া-তী।
সে বলবেঃ হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু অগ্রে প্রেরণ করতাম!
(25
فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُعَذِّبُ عَذَابَهُ أَحَدٌ
ফাইয়াওমাইযিল লা-ইউ‘আযযি বু‘আযা-বাহূআহাদ।
সেই দিন তাঁর শাস্তির মত শাস্তি কেহ দিতে পারবেনা
(26
وَلَا يُوثِقُ وَثَاقَهُ أَحَدٌ
ওয়ালা-ইঊছিকুওয়াছা-কাহূআহাদ।
এবং তাঁর বন্ধনের মত বন্ধন কেহ করতে পারবেনা।
(27
يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ
ইয়া-আইয়াতুহান্নাফছুল মুতমাইন্নাহ
বলা হবেঃ হে প্রশান্ত চিত্ত!
(28
ارْجِعِي إِلَىٰ رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً
ইরজি‘ঈইলা-রাব্বিকি রা-দিয়াতাম মারদিইয়াহ।
তুমি তোমার রবের নিকট ফিরে এসো সন্তুষ্ট ও সন্তোষ ভাজন হয়ে
(29
فَادْخُلِي فِي عِبَادِي
ফাদখুলী ফী ‘ইবা-দী।
অতঃপর তুমি আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও
(30
وَادْخُلِي جَنَّتِي
ওয়াদখুলী জান্নাতী।
এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।
আশা করছি সূরা আল-ফাজ্র (Al-Fajr) বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ পোস্টটি আপনাদের উপকারে আসবে। আমাদের সকলকে সূরাটি পড়ার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন|