বাংলাদেশের সংস্কৃতি অনুচ্ছেদ |
বাংলাদেশের সংস্কৃতি অনুচ্ছেদ
বাংলাদেশের সংস্কৃতি অনেক পুরনো এবং নান্দনিকতার ভরপুর। সংস্কৃতি একটি দেশ তথা গোটা জাতির পরিচয় বহন করে। সংস্কৃতি হলাে একটি নির্দিষ্ট দেশ বা জাতির রীতিনীতি, বিশ্বাস, শিল্প ও জীবনধারা। একটি সমাজের সংস্কৃতি এতে বসবাসরত মানুষের আচরণ পদ্ধতির দ্বারা গঠিত হয়। ভাষা, সংগীত, ভালাে-মন্দ সম্পর্কে ধারণা, কর্মপদ্ধতি ও খেলাধুলা এবং যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য বিষয়-এ সবই সমাজের সংস্কৃতির অংশ। প্রতিটি সমাজের নিজস্ব সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। একটি জাতি হিসেবে বাঙালিদেরও নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে।
আমাদের নিজস্ব ভাষা, সংগীত এবং সামাজিক রীতি-নীতি রয়েছে যা আমাদের সংস্কৃতিকে গড়ে তুলেছে। আমাদের গানগুলাে গ্রাম্য এবং সরল ও মনোহর জীবন চিত্রের ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমাদের আছে লােকসংগীত এবং স্থানীয় যাত্রাপালা। আমাদের বিবাহ ব্যবস্থা ধর্মীয় এবং সামাজিক নিয়মের ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা নববর্ষ দিবস হিসেবে পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন করি। আমাদের খাদ্যাভ্যাসে ভাত ও মাছ রয়েছে আর আমরা লুঙ্গি, শার্ট, শাড়ি এবং ব্লাউজের মতাে ঐতিহ্যবাহী পােশাক পরিধান করি। আমরা হাডুডু, গােল্লাছুট, ফুটবল, দাড়িয়াবান্ধা, বউচি, কানামাছি এবং অন্যান্য আরও নিজস্ব খেলা খেলে থাকি। যে জাতির সংস্কৃতি যত সমৃদ্ধ সে জাতি হিসেবে ততো উন্নত। যদিও আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ তবুও বর্তমানে এটি অন্যান্য দেশের বিশেষ করে প্রতিবেশী ভারত এবং পাশ্চাত্য দেশের সংস্কৃতির একটি মিশ্রণ।
বর্তমান আধুনিক যুগে এসে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে হারাতে বসেছি। পাশ্চাত্যের সংস্কৃতি আমাদের তরুন সমাজকে শিকলে বধে রেখেছে। আমাদের সংস্কৃতির মনোমুগ্ধকর গান, নাচ, উৎসব, পোশাক-পরিচ্ছদ, খেলাধুলা আজ পাশ্চাত্য সংস্কৃতির করাল থাবায় মুখ থুবড়ে পড়ে গেছে। তরুন যুব সমাজ পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে আসক্ত হয়ে তাদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। যুব সমাজকে এই অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সকলে একযোগে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে বহির্বিশ্বের অপসংস্কৃতি যেন আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে গ্রাস করতে না পারে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের সংস্কৃতি আবার তার আগের রং খুঁজে পাবে।