অন্যান্য
Trending

[PDF] বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস নিয়ে বক্তব্য ও ভাষন ৫০০ শব্দে | ১৭ই মার্চ

5/5 - (1 vote)


৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ৫০০ শব্দে ভাষণ ও বক্তব্য

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মদিন উদযাপন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আজকের সভার সম্মানিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, শিক্ষক- শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী ও উপস্থিত সম্মানিত সুধী, আসসালামু আলাইকুম।

বঙ্গবন্ধু শুধু একজন মহান নেতৃত্ব নয়, তিনি একজন দার্শনিকও। যিনি মুক্তিযুদ্ধের ২০ বছর আগে থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আমাদের বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের ছিনিয়ে আনা লাল সবুজের পতাকা, একটি ইতিহাস, একটি মহাকাব্য একটি বাংলাদেশ । আমাদের বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে গোপালগঞ্জের সেই ছোট্ট গ্রাম টঙ্গীপাড়ায়

[PDF] বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলা রচনা ৫০০,২০০ ও ১০০ শব্দ
বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলা ছবি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । বঙ্গবন্ধুর সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জাগ্রত হয়েই পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল গোটা বাঙালি জাতি। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রতিবাদী। চোখের সামনে অন্যায় একদম সহ্য করতো না। অন্যায় দেখলে তার প্রতিবাদ করতো। তিনি গরিব- অসহায় মানুষকে গভীরভাবে ভালবাসতেন। আর এই ভালবাসাই তাকে টেনে নিয়ে যায় রাজনীতির দিকে।

গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯২৯ সালে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৪১ সালে অসুস্থ শরীর নিয়ে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় আংশগ্রহণ করেন। রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর পিতা তাঁকে বাধা দেননি। বলেছিলেন,

বাবা, রাজনীতি কর আপত্তি করব না, পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ এত সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলো না। লেখাপড়া না শিখলে মানুষ হতে পারবে না। আর একটা কথা মনে রেখ, Sincerity of purpose and honesty of purpose থাকলে জীবনে পরাজিত হবে না।

ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরপরই মুজিব কলকাতায় পাড়ি জমান ৷ কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক জীবনের বড় পরিবর্তনগুলো শুরু হয় ৷ তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় হন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিমের মতো নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হলে তিনিও ঢাকায় চলে আসেন। নতুন রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। ১৯৪৯ সালে নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন।

বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবী নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলনে অংশ নেয়ার মাধ্যমেই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক তৎপরতার ত্বরান্বিত হয় ৷ ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ এর মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন,১৯৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন ও১৯৬৬ এর ঐতিহাসিক ছয় দফা ভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা।

১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতা তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে সমর্থন জানায়। কিন্তু পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তার ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান / জাতির জনক - রচনা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান / জাতির জনক

২৫ শে মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী পরিকল্পিত গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনগণ প্রায় নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করে।তাঁর অবিসংবাদিত নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা

বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের। স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার এই মহান নেতার জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। কোনো বিশেষ ঘটনা বা আনন্দের দিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়৷ বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে আনন্দের দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। এজন্য ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শিশুদের অত্যন্ত আদর করতেন, ভালোবাসতেন। শিশুদের সাথে গল্প করতেন, খেলা করতেন।তিনি বিশ্বাস করতেন আজকের শিশুরাই আগামীদিনে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিবে। তরুণ প্রজন্ম এই মহান নেতার আদর্শ থেকেই দেশ গড়ার অনুপ্রেরণা লাভ করে৷বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর মমতা ছিল অপরিসীম। তাই তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে আমরা জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করেছি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব, সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ও ঐতিহাসিক ভাষণ সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল।যার ফলে আমরা পেয়েছি স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ।

আজকের দিবসটি মূলত বঙ্গবন্ধুর শিশুকালকে স্মরণের উদ্দেশ্যে উদযাপিত হলেও এ দিবসের সাথে জড়িয়ে আছে এদেশের প্রত্যেকটি শিশুর হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ । শিশুদের সম্পর্কে সুকান্ত ভট্টাচার্য তার ‘আগামী’ শিরোনামের কবিতায় যথার্থই বলেছেন, “জড় নই, মৃত নই, নই অন্ধকারের খনিজ/আমি তো জীবন্ত প্রাণ, আমি এক অঙ্কুরিত বীজ।”

শিশু দিবসে জাতিসংঘের চাওয়া হলো- শিশুকে শিশুর সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ করে দেয়া৷ এতে করে শিশুরা নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান প্রদান করবে জাতিতে, গোষ্ঠীতে। নিজেরা নিজেদের উৎসাহ দেবে, নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করবে৷ জাতিসংঘ ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার সনদ ঘোষণার ১৫ বৎসর পূর্বে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের অধিকার সুরক্ষার জন্য শিশু আইন প্রনয়ণ করেন।

সদ্য স্বাধীন দেশে শিশুর শিক্ষা, সুরক্ষা ও উন্নয়নে কল্যাণকর বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি, সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন আইন, নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।আমাদের প্রতেককেই শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শিশু বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে আরও অনেক বেশি আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান হতে হবে ৷

পরিশেষে, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র’ একটি কবিতার কয়েকটি লাইন উচ্চারণ করছি-

ছাড়পত্র বইয়ের ছবি
ছাড়পত্র বইয়ের ছবি

জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠেচলে যেতে হবে আমাদের। চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্ৰাণপ্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমিনবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি।

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তব্য/ভাষন PDF

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button