বাংলা রচনা

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ | রচনা

2.5/5 - (243 votes)

১৫ আগস্ট রচনা প্রতিযোগিতার জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ নিয়ে ১৫০০ শব্দে একটি রচনা দেওয়া হল। 

ভূমিকা

কোন জাতি যখন প্রকৃতই কোন সংকটের সম্মুখীন হয় তখন ঠিকই সেই জাতির পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে পৃথিবীতে আবির্ভাব ঘটে কোন না কোন মহাপুরুষের। বাংলাদেশের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমনই একজন উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কস্বরূপ। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি যখন ভুগছে অস্তিত্ব সংকটে, তখনই বাঙালি জাতির পরিত্রাণের প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। লাল-সবুজের পতাকার ইতিহাসে বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু নামটি অবিচ্ছেদ্য। তিনি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসতেন,মানুষকে স্বপ্ন দেখাতেন। বঙ্গবন্ধু দয়ালু মানুষ ছিলেন। তার ইতিহাস বােধ বাঙালি জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু সােনার বাংলা গড়ার পথ দেখিয়েছেন। বাঙালির চাওয়া, তাদের দাবি, আশা ও আকাঙ্ক্ষা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ | রচনা

জন্ম ও পরিচয়

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গােপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান, মা সায়েরা খাতুন। দুই ভাই, চার বােনের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পিতা-মাতার তৃতীয় সন্তান। পারিবারিক আনন্দঘন পরিবেশে টুঙ্গিপাড়ায় তার শৈশব-কৈশােরের দিনগুলাে কাটে।

রাজনৈতিক জীবন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রাহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময়। স্কুলের ছাদ সংস্কারের জন্য একটি দল গঠন করে নিজ নেতৃত্বে তিনি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নিকট দাবি পেশ করেন। ১৯৪০ তিনি নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে  এক বছরের জন্যে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে এনট্র্যান্স পাশ কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে আইন পড়ার জন্য ভর্তি হন।

কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ)  পড়া থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি বেঙ্গল মুসলিম লীগে যোগ দান করার সুবাধে তিনি বাঙালি মুসলিম নেতা হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্যে আসেন। একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র গড়ে তোলার আন্দোলন নিয়ে তিনি ১৯৪৩ সালে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান পৃথক হওয়ার পর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হয়। মুসলিমদের রক্ষা করার জন্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দীর সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক তৎপরতায় যুক্ত হন। এরপর ঢাকায় ফিরে এসে ১৯৪৮ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রধান ছাত্রনেতায় পরিণত হন। 

সােনার বাংলা গড়ার গােড়াপত্তন

বঙ্গবন্ধু ছিলেন মনে-প্রাণে বাঙালি। শৈশবেই বঙ্গবন্ধুর মানস-চেতনায় বাঙালি জাতির শৃঙ্খলমুক্তির আকাঙ্খ এবং রাজনৈতিক চেতনার বীজ প্রােথিত হয়েছিল। গুরুসদয় দত্তের ব্রতচারী আন্দোলন কিশাের মুজিবের মানসচেতনায় রােপণ করেছিল বাঙালিয়ানার বীজ। ১৯৩৯ সালে গােপালঞ্জ মিশনারীর স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে ভর্তির পর তিনি এ আন্দোলনে যুক্ত হন। ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলনকে বেগবান করতে ও বাঙালির মধ্যে জ্ঞান, শ্রম, একতা ও দেশপ্রেমের দীক্ষাদানের জন্য ১৯৩১ সালে গুরুসদয় দত্ত ব্রতচারী আন্দোলনের সূচনা করেন। গুরুসদয় দত্তের বাঙালিয়ানার মন্ত্র –

ষােলাে আনা বাঙালি হ’
বিশ্ব মানব হবি
যদি শাশ্বত বাঙালি হ’

শােণিতে ধারণ করেই শেখ মুজিব হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি । ব্রতচারী আন্দোলনের স্বদেশপ্রেম ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা হৃদয়ে লালন করেই শেখ মুজিব সােনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ | রচনা
 

মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর অবদান 

১৯৫২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর সময় পর্যন্ত অনেক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল বাঙালি জাতিকে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। অনেক আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ব্রিটিশদের কাছ থেকে অর্জিত স্বাধীনতা সত্বেও পূর্ব পাকিস্তানীরা স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি। অনেক ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়ে আমরা পেলাম স্বাধীনতা। তবে এ স্বাধীনতা একদিনে অর্জিত হয়নি। তরুন বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার। ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু হল তার স্বাধীনতার অর্জনের মূল সোপান।

ভাষা আন্দোলনের প্রাক্কালে বহুবার মুজিবকে জেলে নেওয়া হয়েছিল। তাতেও তাকে ধমিয়ে রাখা যায়নি। যতবার জেলে গিয়েছেন ততবার যেন আরও মনে শক্তি সঞ্চার করেছিলেন। অবশেষে ১৯৫৪ সালের ৭ মে মুসলিম লীগের সমর্থনে বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দেয়া হয়।

এরপর ১৯৬৬ সালে তিনি পেশ করেন বাঙালি জাতির ঐতিহাসিক মুক্তির সনদ ছয় দফা। এ সময় নিরাপত্তা আইনে তিনি বারবার গ্রেফতার হতে থাকেন। আজ গ্রেফতার হয়ে আগামীকাল জামিনে মুক্ত হলে সন্ধ্যায় তিনি আবার গ্রেফতার হন। এরকমই চলে পর্যায়ক্রমিক গ্রেফতার। তিনি কারারুদ্ধ জীবনযাপন করতে থাকেন। তাঁকে প্রধান আসামি করে দায়ের করা হয় আগরতলা মামলা। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়। যা পরবর্তীতে গণ আন্দোলনের রূপ নেয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক।নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। 

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ | রচনা


৭ ই মার্চ ১৯৭১ সালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধুর  ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানায়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে সারা বাংলাদেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এমনি অবস্থায় গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘােষণা দেন। শুরু হয় বাংলাদেশর মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা পেলাম স্বাধীনতা। সেই সাথে  বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ পেলো একটি নতুন মানচিত্র ও লাল-সবুজের পতাকা।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশে

বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, সুস্থ, সবল জ্ঞান, চেতনা সমৃদ্ধ, কোনরকম ভেদ বৈষম্যহীন, শােষণহীন, অসাম্প্রদায়িক, চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশপ্রেমিক মানুষের উন্নত সমৃদ্ধ এক আধুনিক বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধুর আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের দর্শনকে সংজ্ঞায়িত করা যায় এভাবে, সব মানুষের জন্য পাঁচ ধরনের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। এর মধ্যে থাকবে রাজনৈতিক স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক সুযােগ, সামাজিক সুবিধাদি স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সুরক্ষার স্বাধীনতা। আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম দর্শন ছিল বৈষম্যহীন অর্থনীতি ও সমাজ বিনির্মাণের বিষয়টি ছিল অন্যতম অনুষঙ্গ।

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার মধ্যে ছিল নতুন দেশ পুনর্গঠনের নীলনকশা ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 

বাংলার মানুষ মুক্ত হাওয়ায় বাস করবে, খেয়ে পরে সুখে থাকবে, এটাই ছিল আমার সাধনা এবং আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, নেতা হিসেবে নয়, আপনাদের ভাই হিসেবে বলছি যদি দেশবাসী খাবার না পায়, তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে পূর্ণ হবে না। 

স্বাধীন দেশের আর্থ সামাজিক চরিত্রের পাশাপাশি আদর্শিক ভিত্তিটিও নির্দেশিত হয়েছিল এমনভাবে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি কোনাে ধর্মীয়ভিত্তিক হবে না রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা  (পরবর্তীকালে সংযােজিত হয়েছিল জাতীয়তাবাদ)।

স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু

১৯৭২ সালের গােড়ায় যে দেশটি স্বীকৃতি ও বান্ধবহীন ছিল, সে দেশটি ২ বছরের মধ্যে ১৯৭৪ এর সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি মর্যাদাপূর্ণ আসন করে নিতে সক্ষম হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যত দ্রুত সম্ভব অগ্রগতির পথে নিয়ে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন। 

  • সােভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্য নিয়ে চট্টগ্রাম আর মংলা বন্দরের মাইন অপসারণ করে বন্দরকে পুনরায় ব্যবহারযােগ্য করে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যকে সচল করে তুলেছিলেন খুব কম সময়ের মধ্যে।
  • দেশের ৫৮০টি শিল্পকারখানাসহ পাকিস্তানিদের পরিত্যক্ত সব সম্পদ জাতীয়করণ।
  • হাজার হাজার শ্রমিককর্মচারীদের কর্মসংস্থান।
  • মাদ্রাসা বাের্ডের পুনর্গঠনসহ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মুক্তিযােদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট স্থাপন। 
  • দেশের কৃষক শ্রেণি ও কৃষিব্যবস্থার ভাগ্য পরিবর্তন ও আমূল সংস্কারের জন্য স্বাধীনতা লাভের পরপরই ৩৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ, কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে-নামমাত্র মূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। 
  • বঙ্গবন্ধু আধুনিক বিজ্ঞান ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেন। একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন।
  •  স্বাধীন হওয়ার মাত্র এক বছরের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন করেন। 

বঙ্গবন্ধুর কিছু মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ছিল, স্বনির্ভরতা অর্জন, দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, বৈদেশিক সহায়তা গ্রহণ ও ব্যবহার, যা হতে হবে শর্তবিহীন এবং ক্রমে এ নির্ভরতার অংশ কমিয়ে আনতে হবে। বেসরকারি খাতকেও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও শিল্পায়নে সম্পৃক্ত করা। স্থানীয় শাসনসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলাের উন্নয়ন, জাতীয় জীবনে নারীদের অংশগ্রহণ। আজকের বাংলাদেশের যে সমৃদ্ধি, উন্নয়নের মহাসােপানে যে অভিযাত্রা তার সূচনা করেছিলেন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা

স্বাধীনতার পর গত পাঁচ দশক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকদূর এগিয়েছে। অর্থনীতির সার্বিক অবস্থা স্থিতিশীলতায় আসার পর এখন শুরু হয়েছে মৌলিক কাঠামােগত পরিবর্তন। এখন আমাদের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে টেকসই উন্নয়নের দিকে। ফলে অর্থনীতির সূচকগুলাের পাশাপাশি সামাজিক সূচকেও মৌলিক পরিবর্তন আসছে। শিল্প ব্যবসাবাণিজ্য, ব্যাংক-বিমা, বিভিন্ন সেবা খাত, যােগাযােগ ব্যবস্থায় এসেছে যুগােপযােগী ধ্যান-ধারণা, চিন্তা-ভাবনা। বাংলাদেশের অর্থনীতির মৌলিক রূপান্তর আজ গােটা | বিশ্বে চমক সৃষ্টি করেছে। যে বাংলাদেশকে এক সময় তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যা দিয়ে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছিল আন্তর্জাতিক একটি মহল, তারাও আজ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিস্ময় প্রকাশ করছে, প্রশংসা করছে। সম্প্রতি নিজ অর্থায়নে তৈরি হয়েছে দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম সেতু “পদ্মা সেতু”। এরফলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ  আন্তর্জাতিকভাবে তার ভাবমূর্তিকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য যােগ্য নেতৃত্বদানকারী অসাধারণ এক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃতিত্বের কথা বারবার আলােচিত হচ্ছে।

উপসংহার

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে যার নাম উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতাে দীপ্যমান তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর দূরদশী, বিচক্ষণ এবং সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং স্বাধীন বাঙালি জাতির জনক। তিনি মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন বলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নটি সত্য হয়েছিল। রাজনৈতিক-সামাজিক ধারাবাহিক বিবর্তনের মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের মহানায়কের এই অবস্থানে উখিত হতে পেরেছিলেন। জেল-জুলুম ও নির্যাতনের কাছে তিনি কখনাে মাথা নত করেননি। বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে অস্বীকার করার শামিল। ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ আজ সমগ্র বাঙালি জাতির কাছে এক ও অভিন্ন নাম। আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। আসুন সবাই বলে উঠিঃ

তোমার স্বপ্নে পথ চলি আজো
চেতনায় মহীয়ান।
মুজিব তোমার অমিত সাহসে
জেগে আছে কোটি প্রাণ।

আরও দেখুনঃ 

 জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময়কালে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর অবদান
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button