তােমার গ্রামকে নিরক্ষরতার অভিযােগ থেকে মুক্ত করতে তুমি যে ভূমিকা পালন করেছে। তার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে একটি পত্র লেখ।
২ জুন, ২০২০
গৌরীপুর।
প্রিয় হালিম,
আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। আশা করি ভালাে আছ। তােমার সাথে অনেকদিন কোনাে যোগাযােগ করতে না পারার কারণ এ সময় আমি আমার গ্রামকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তাই তােমাকে পত্র লিখতে দেরি হলাে। গ্রামের নিরক্ষর মানুষ যে কী অভিশপ্ত জীবন-যাপন করে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। নিরক্ষরতার কারণে তারা প্রতিনিয়ত ঠকছে, বঞ্চিত হচ্ছে, রােগশােকে ধুকে মরছে। এসব প্রত্যক্ষ করে ব্যথিত হতাম। তাই সমমনা কয়েকজন মিলে ‘প্রত্যাশা’ নামে একটা সংগঠন গড়ে তুলেছি। যার প্রধান কাজ হলাে যেকোনাে মূল্যে আমাদের গ্রামকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করা। সংগঠনটি গড়ে তুলে আমরা প্রথমে গ্রামের মুরুব্বিদের সাথে কথা বলি। তারা আমাদের কথা শুনে খুব খুশি হন এবং প্রয়ােজনীয় পরামর্শ ও সাহায্য-সহযােগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের উদ্যোগের কথা জেনে, তার কাছারিঘরটা নৈশ বিদ্যালয়ের জন্য ছেড়ে দেন। আমরা কয়েকজন শিক্ষকের ভূমিকা পালন করি। পুরাে গ্রামে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। নিরক্ষর ছেলে, বুড়াে, বউঝিরা এ নৈশ বিদ্যালয়ে আসতে শুরু করে। আমরা প্রত্যেকে কাজ ভাগ করে নিলাম। এভাবে আজ ছয়মাস কাজ করছি। আশা করছি আর ছয়মাস কাজ করলে গ্রামে সব বয়স্কদের নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে পারব।
ইতােমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলাপ্রশাসক আমাদের নৈশ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে গেছেন। বিভিন্নভাবে সাহায্যেরও আশ্বাস দিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় একটা সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আমি বুঝলাম, উদ্যোগ নিলেই হয়। উদ্যোগ নিয়েছি বলেই আজ গ্রামের বয়স্করা নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে চলেছে। তুমি সময় পেলে একবার এসে আমাদের নৈশ বিদ্যালয়টি দেখে যেও। আজ আর নয়। চিঠির উত্তর দিও।
ইতি
তােমার বন্ধু
হারুন রশিদ।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।