পত্র লিখন : শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে উপদেশ প্রদান করে পত্র
শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে উপদেশ প্রদান করে তােমার ছােট বােনের নিকট একখানা পত্র লেখ।
শ্রমের মর্যাদা সম্পর্কে উপদেশ প্রদান করে পত্র |
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
মুরাদনগর, কুমিল্লা।
স্নেহের সাবানা,
আমার স্নেহ ও আদর নিস। তাের চিঠি হাতে পেয়েই লিখতে বসলাম। চিঠি পড়ে খুব খুশি হয়েছি। তবে কিছুটা উদবিগ্নও হয়েছি তাের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে। আমি হােস্টেলে চলে আসায় তুই একা হয়ে পড়েছিস। মা সবসময় ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাছাড়া ঘরের কাজে মাকে সাহায্য করার কেউ নেই- এমন নৈরাশ্যজনক কথা আমি তাের কাছ থেকে প্রত্যাশা করিনি। তুই মায়ের পাশে আছিস এটাই অনেক কিছু। তবে সংসারের কাজে মাকে একটু সাহায্য করলে মায়ের একটু উপকার হয়। মা তাে একেবারে সুস্থ। তাও তাে না। দুইবার অপারেশন হয়েছে। তাের অলসতার কথা আমার জানা আছে। তাের সে অভ্যাস বদলাতে হবে। সংসারে যদি সামান্য শ্রম দিস তাহলে তাের খুব যে সময় নষ্ট হবে; কষ্ট হবে তাও তাে না। সংসার অনেক সুখের হবে। মনে রাখিস কাজ করলে মানুষ ছােট হয়ে যায় না। ঘর-বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য। কাজের মেয়ে সবকাজ করে দেবে তা কি ঠিক। আর কাজের মেয়ে থাকতে হবে এমনও তাে নয়। সংসারের সব কাজ নিজেদেরই করা উচিত। কাপড় কাচা, ঘর মােছা, বাগানের পরিচর্যা, বিছানাপত্র গােছানাে এমনকি মাকে রান্না করে এ সবকিছুই তাে তুই করতে পারিস। পরিশ্রম করলে শরীর ভালাে থাকে। জীবনে একদিন অনেক বড় দায়িত্ব নিতে হবে। এখন কাজ না করলে তখনও করতে পারবি না। আর কোনাে কাজকেই অবহেলা করা উচিত নয়। সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে। যারা কাজ কে হেয় করে দেখে। ছােট বা তুচ্ছ কাজে অপমানবোধ করেন। এটা মােটেও ঠিক নয়। শ্রমের মর্যাদা দিতে যারা জানে তারাই একদিন অনেক উন্নতি লাভ করেন। কাজের ক্ষেত্রে মান-অপমানবােধ জাগ্রত হওয়া উচিত না। বিধাতার দেওয়া সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে জীবনকে সুন্দর কর। তখন পরিবার, সমাজ, জাতি সুন্দর হয়ে উঠবে। জীবন সফল করার জন্য আত্মনির্ভরশীল হওয়া আবশ্যক। এজন্যই মনীষীরা শ্রমের মর্যাদা দিতে বলেছেন।
আজকে এখানেই শেষ করছি। বাবা-মাকে আমার সালাম দিস। আমি ভালাে আছি।
ইতি, তােরই বড় বােন
রেহানা।
প্রেরক ও প্রাপকের নাম ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে।