![]() |
এলাকায় অনুষ্ঠিত গ্রন্থমেলা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন |
তোমার এলাকায় অনুষ্ঠিত গ্রন্থমেলা সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশের উপযোগী একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
পাবনায় গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ থেকে সপ্তাহব্যাপী গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত হলাে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ চত্বরে। বিশাল মাঠের সবুজ ঘাসের উপর নানা আকারের ৪০টি স্টল চমৎকার দৃশ্যের অবতারণা করেছিল । লােকমুখে প্রকাশ, ইতঃপূর্বে পাবনা শহরে এত বড় বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। মেলার উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মিজান উদ্দিন। তিনি উদ্বোধনী ভাষণে বইপড়ার প্রয়ােজনীয়তা এবং সেক্ষেত্রে এ জাতীয় গ্রন্থমেলার উপযােগিতা চমৎকার ভাষায় বর্ণনা করেন।
মেলার বাড়তি আকর্ষণ ছিল ভারতীয়, আমেরিকান ও রাশিয়ান দূতাবাস কর্তৃক আয়ােজিত বর্ণাঢ্য স্টলগুলাে। আগ্রহী দর্শক পাঠকের কাছে এগুলাে ছিল বাড়তি পাওনা। গ্রন্থমেলাটিকে আকর্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ করে তােলার জন্য আয়ােজকবৃন্দের আন্তরিকতার অভাব ছিল না। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্টলগুলাে খােলা ছিল। বাংলা একাডেমি, মুক্তধারা, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, বুক পয়েন্ট, পল্লব ব্রাদার্স, ইউনিভার্সিটি বুক কর্ণার প্রভৃতি সংস্থার স্টলগুলােতে দর্শক-পাঠকের সমাগম বেশি ছিল। বয়স্কদের চেয়ে তরুণদের মধ্যেই বই সম্পর্কে আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে বেশি। এটি জাতির জন্য নিঃসন্দেহে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও উদ্দীপনামূলক লক্ষণ বলে বিবেচিত হবে। লক্ষ করা গেছে, উপন্যাস ও গল্পের বই বিক্রি হয়েছে বেশি। কবিতার বই বিক্রি হলেও প্রবন্ধ বা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে রচিত বইগুলাের বিক্রি সংখ্যা নিতান্তই কম। বাঙালির কাব্যপ্রীতি বিশ্বনন্দিত, কিন্তু এবারের এই মেলা সে প্রমাণ রাখতে পারেনি।
মেলা চলাকালীন তিনদিন তিনটি আলােচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৭, ১৯ ও ২১ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে উপন্যাস, ছােটগল্প ও কবিতার উপর । আলােচনাসভায় দেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক-কবিগণ অংশগ্রহণ করেন। উপন্যাস বিষয়ে মূলবক্তা ছিলেন জুলফিকার মতিন, ছােটগল্পে হাসান আজিজুল হক এবং কবিতায় রফিক আজাদ। নাটক ও প্রবন্ধ সম্বন্ধে এরকম উদ্যোগ কেন গৃহীত হয়নি সে ব্যাপারে উদ্যোক্তারা সদুত্তর দিতে পারেননি। যাই হােক, প্রত্যেক আলােচক স্ব-স্ব বিষয়ে অত্যন্ত মনােগ্রাহী আলােচনা করেন। সাহিত্য-বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে আলােচনা শুনে দর্শক-শ্রোতাবৃন্দ নিজেদের উন্নত সাংস্কৃতিক রুচির স্বাক্ষর রেখেছেন।
সমাপনী সন্ধ্যাটি ছিল মনােমুগ্ধকর। স্থানীয় শিল্পীগণ কর্তৃক আয়ােজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকল স্তরের মানুষকে আনন্দ দিয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতে শ্রেষ্ঠ স্টলের পুরস্কারটি বুক পয়েন্টের পরিচালক এম.এ. মুসা খানের হাতে তুলে দেন বিশিষ্ট কবি ও কথাশিল্পী সৈয়দ শামসুল হক। সুন্দর স্টল সাজানাের জন্য বিশেষ পুরস্কার পায় স্থানীয় কিশােরদের পরিচালিত একটি ক্ষুদ্র স্টল ‘অঙ্কুর’। সভাপতি রাজশাহী বাের্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল হায়াত যখন গ্রন্থমেলার সমাপ্তি ঘােষণা করলেন তখন শ্রোতা-দর্শকবৃন্দ পেয়ে হারানাের বেদনায় ব্যথিত চিত্তে ঘরে ফিরতে শুরু করলেন।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
