Source: IstockPhoto |
বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম মাধ্যম সড়ক পথ। এই সড়ক যোগাযোগ বিভিন্ন কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবরের কাগজ ও টিভি চ্যানেলে এখন শিরোনাম হয়ে দাঁড়ায় ‘সড়ক দুর্ঘটনা’। তবে এ বিষয়ের ওপর বহু লেখালেখি এবং প্রস্তাবনার পরও সড়ক দুর্ঘটনা কমেনি, বরং ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। প্রশ্ন ওঠে বিশ্বের মানদণ্ডে বাংলাদেশে কি সড়ক দুর্ঘটনা বেশি, নাকি একইভাবে চলছে। বিষয়টি নিয়তি নির্ভর মনে করলে কোনো প্রশ্ন ওঠে না। কিন্তু দুর্ঘটনা যদি মানুষের সৃষ্ট হয় তাহলে তা প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ প্রতিদিনের দুর্ঘটনা যে উৎকন্ঠা, উদ্বেগ, দুঃখ-শোক আর যন্ত্রণার জন্ম দেয় তার কোনো তুলনা নেই। সড়ক দুর্ঘটনায় যারা অকাল মৃত্যুবরণ করে তারা আত্মীয়-স্বজনের হৃদয়ে চির শোকের যন্ত্রণা রেখে যায়। কিন্তু যারা আহত হয় তারা চির পঙ্গুত্ব বরণ করে অসহায় জীবনযাপন করে অপরের করুণার পাত্র হিসেবে বেঁচে থাকে। তবে আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেক বেশি। যার অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং লাইসেন্স ও ফিটনেস বিহীন যানবাহনের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি, সংকীর্ণ ও আঁকাবাঁকা রাস্তা, হকারদের ফুটপাত দখল ও চালকের নিয়ন্ত্রণ হারানো। এছাড়া, রাস্তা পারাপারে অসচেতনতা, অপরিকল্পিত স্পিড ব্রেকার, ফুট-ওভারব্রিজ ব্যবহার না করা ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংও সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে গাড়ি চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পূর্বে তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। পরিকল্পিত ট্রাফিক আইন চালু করতে হবে। অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট প্রশস্ত করতে হবে। ফিটনেস বিহীন গাড়ি চলাচলে পূর্ণ আইনি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিনিয়ত ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক ও জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে। গাড়িতে ধারণ ক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত মালামাল ও যাত্রী বহনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। বেপরোয়া ও প্রতিযোগিতাভিত্তিক গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর এ সকল প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাই পারে ‘সড়ক দুর্ঘটনা’ হ্রাস করতে। মোট কথা, স্বরাষ্ট্র, যোগাযোগ এবং আইন মন্ত্রণালয় সক্রিয় হলে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব। আর আমাদের জাতীয় জীবনে এই সমস্যার সমাধান হলেই সম্ভব হবে বহু মূল্যবান জীবন অকালে ঝরে পড়া রোধ ও বহু আকাঙ্ক্ষিত নিরাপদ সড়কের স্বপ্ন বাস্তবায়ন।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
