শিশু অধিকার – অনুচ্ছেদ। ছবিঃ সংগৃহীত |
শিশু অধিকার
‘অধিকার’ কথাটি কোনাে কিছু পাওয়ার নৈতিক বা আইনগত দাবিকে নির্দেশ করে। যে সকল অধিকার বিশেষভাবে শিশুদের সাথে সম্পর্কযুক্ত সেগুলােকে শিশু অধিকার বলা হয়। সম্মিলিত জাতিসংঘে ১৯৫৯ সালে ‘শিশু অধিকার সনদ’ ঘােষণা করা হয়। জাতিসংঘের জেনেভা কনভেনশন শিশুদের কিছু মৌলিক অধিকার চিহ্নিত করেছে। কনভেনশন অনুসারে শিশুদের সকল ধরনের হুমকি থেকে রক্ষা পাবার, বেঁচে থাকা এবং অস্তিত্ব বজায় রাখার, শিক্ষার, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সুস্বাস্থ্যের অধিকার দিতে হবে।
এ ছাড়া তাদের রয়েছে সুস্থ শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং শ্রমে বাধ্য না হওয়ার অধিকার। কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ শিশু এই অধিকারগুলাে পায় না। এর পেছনে কিছু কারণ আছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে দারিদ্র। বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ। এদেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। তাই দরিদ্র পরিবারের শিশুরা খুব অল্প বয়সেই কাজ করতে বাধ্য হয়। ফলে তারা আইনগত অধিকারগুলাে ভােগ করতে পারে না। এ ছাড়া অধিকাংশ শিশু বস্তিতে খুব অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করে। কখনাে কখনাে তারা কাজ করতে বাধ্য হয়।
কিছু অসৎ মানুষ শিশুদের সস্তা শ্রমকে কাজে লাগায়। মানুষের নিরক্ষরতা হচ্ছে আরেকটি প্রধান কারণ। নিরক্ষর লােকজন এসব অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞ। তাই এ সকল পরিবারের শিশুরা তাদের প্রাপ্য অধিকার ভােগ করতে পারে না। Wordsworth-এর ভাষায়- ‘Child is the father of a nation’. বস্তুত শিশুর মধ্যে নিহিত রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। কারণ, শিশুই একদিন বড় হয়ে দেশ ও সমাজের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। আমাদের শিশুরা হচ্ছে জাতির ভবিষ্যৎ। তাই আমাদেরকে অবশ্যই শিশু অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এরং শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনসমূহের যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি।
শিশুরা যাতে তার প্রাপ্য অধিকার পায় তা সবার আগে পরিবার থেকে নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সামাজিকভাবে শিশুর অধিকারকে নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ জনগণকে সচেষ্ট করার লক্ষে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম গান, কবিতা, গল্প, নাটক নির্মাণ করতে হবে। সর্বোপরি শিশুদের অধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য দারিদ্র বিমােচন আবশ্যক। জাতিসংঘ ১৯৫৪ সালে ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বাংলাদেশে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে। শিশুদের অধিকার আদায়ের জন্য যে বিশেষ একটি দিবস রয়েছে সে বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেষ্ট করার লক্ষে সকলে বলি-
‘প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জালএ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমিনবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার’।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।