ইসলাম ও জীবন

শবে বরাতের ৫টি ফজিলতপূর্ণ আমলসমূহ

Rate this post
শবে বরাতের ৫টি ফজিলতপূর্ণ আমলসমূহ

শবে বরাত কথাটি ফার্সী। এর আরবী হল লাইলাতুল বারাত। ‘বারাত’ শব্দের অর্থ মুক্তি এবং ‘শব’ বা লাইলাত শব্দের অর্থ রাত । অতএব ‘শবে বরাত’ -এর অর্থ মুক্তির রাত। এই রাতে আল্লাহ তা’আলা অভাব-অনটন, রােগ-শােক ও বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি চাওয়ার জন্য মানুষকে আহ্বান জানান এবং তাঁর নিকট চাইলে তিনি এসব থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন, তাই এ রাতকে শবে বরাত বা মুক্তির রাত বলা হয়।

শবে বরাতের আমলসমূহ

শাবান মাসের ১৫ই রাত  অর্থাৎ, ১৪ই শাবান দিবাগত রাতই হল এই শবে বরাত । হাদীস শরীফের আলোকে এবং ফেকাহ্‌র কিতাবে বর্ণিত তথ্য অনুযায়ী শবে বরাত উপলক্ষে ৫টি আমলের কথা প্রমাণিত হয়। যথা:

১। ১৪ই শাবান দিবাগত রাতে জাগরণ করে নফল ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-আযকার ও তিলাওয়াতে লিপ্ত থাকা। এ রাতে যেকোনাে নফল নামায পড়ুন, যেকোনাে সূরা দিয়ে পড়তে পারেন। কোন নির্দিষ্ট সূরা দিয়ে পড়া জরুরি নয়। যত রাকআত ইচ্ছা পড়তে পারেন। আরও মনে রাখবেন নফল নামায ঘরে পড়াই উত্তম। একান্তই যদি ঘরে নামায পড়ার পরিবেশ না থাকে তাহলে মসজিদে পড়তে পারেন। বর্তমানে শবে বরাত ও শবে কদর উপলক্ষে ইবাদত করার জন্য মসজিদে ভিড় করার একটা রছম হয়ে গিয়েছে। এর ভিত্তিতে কোন কোন মুফতী শবে বরাত ও শবে ক্বদরে ইবাদত করার জন্য মসজিদে একত্র হওয়াকে মাকরূহ ও বিদআত বলে ফতুয়া দিয়েছেন। তাই যথাসম্ভব ঘরেই ইবাদত করা উত্তম হবে।

২। এ রাতে বেশি বেশি দু’আ করা। কেননা আল্লাহ তা’আলা সূর্যাস্তের পর থেকে সুবহে সাদেক পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে এসে মানুষকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য, রিযিক চাওয়ার জন্য, রােগ-শােক, বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি ও বিভিন্ন মাকছুদ চাওয়ার জন্য আহবান করতে থাকেন। সহীহ ইবনে হিব্বান ও তাবারানীতে বর্ণিত একটি সহীহ হাদীসে আছে, এ রাতে আল্লাহ তা’আলা মুশরিক ও বিদ্বেষভাবাপন্ন ব্যক্তি ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন। তদুপরি আর এক হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী এই রাতে মানুষের সারা বৎসরের হায়াত,মওত ও রিযিক দৌলত ইত্যাদি লেখা হয়ে থাকে। অতএব এ রাতে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি করে দুআ করা চাই।

৩। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, এই রাতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবরস্থানে গিয়েছিলেন এবং মৃত মুসলমানদের জন্য মাগফিরাতের (ক্ষমার) দুআ করেছিলেন। তাই এই রাতে কবর যিয়ারতে যাওয়া যায়। তবে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবরস্থানে একাকী গিয়েছিলেন- কাউকে সঙ্গে নিয় আড়ম্বর সহকারে যাননি। তাই এ রাতে দলবল নিয়ে সমারােহ না করে আড়ম্বরের সাথে না করে অনাড়ম্বরভাবে কবর যিয়ারতেও যাওয়া যায়।

৪। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত মুসলমানদের জন্য মাগফিরাতের দুআ করেছিলেন। এটা ঈছালে ছওয়াবের অন্তুর্ভুক্ত। তাই এ রাতে মৃতদের জন্য দুআ করা ছাড়াও অন্যান্য পদ্ধতিতেও ঈছালে ছওয়াব করার অবকাশ রয়েছে। যেমন: কিছু দান-খয়রাত করে বা কিছু নফল ইবাদতবন্দেগী করে তার ছওয়াব মৃতদেরকে বখশে দেয়া। এরূপ করাও উত্তম হবে।

৫। পরের দিন অর্থাৎ, ১৫ই শাবান নফল রােযা রাখা উত্তম।

* উপরােল্লেখিত ৬টি বিষয় ব্যতীত শবে বরাত উপলক্ষে আর বিশেষ কোন আমল কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়। শবে বরাত উপলক্ষে হালুয়া রুটি তৈরি করা, মােমবাতি জ্বালানাে, আতশবাজী ও পটকা ফোটানাে ইত্যাদি নিষিদ্ধ। এগুলাে রছম, বিদআত ও গােনাহের কাজ।

বি. দ্র. কিছু লােক বলে থাকে, শবে বরাত-এর ফযীলত ও আমল সম্বন্ধে কোনাে সহীহ হাদীস নেই। তাদের কথা ভুল। এ সম্পর্কিত হাদীসগুলাের বেশ কয়েকটি সহীহ/আমলযােগ্য পর্যায়ের।
তথ্যসূত্রঃ আহকামে যিন্দেগী (মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দিন)

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button