মূলভাবঃ পৃথিবীতে আত্মপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম প্রয়ােজন। সংগ্রামহীন জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। জগতের বুকে স্মরণীয় হতে চাইলে কঠোর সংগ্রাম করতে হয়। মহিমা অর্জনের চেয়ে বড় কিছু পৃথিবীতে নেই।
সম্প্রসারিত ভাবঃ মানবজীবন ফুলশয্যা নয়। অনেক কষ্টে , ত্যাগ, তিতিক্ষা, পরিশ্রম ও সংগ্রামের বিনিময়ে মানুষ মহিমান্বিত হতে পারে। বিশ্বের অগনিত মানুষ আত্ম-প্রতিষ্ঠা অর্জন তথা টিকে থাকার জন্য অবরিত সংগ্রাম করে চলছে। এ ধরার বুকে মানবের আবির্ভাব ঘটেছে হাজার হাজার বছর পূর্বে। সে থেকে আজ পর্যন্ত অগণিত মানব জন্মেছে, আবার কিছুকাল সংসার রচনা করে, নিজেকে বিলিয়ে পরপারের যাত্রী হয়েছে। সেই অসংখ্য , অগনিত, অজস্র বিলীন মানুষের মধ্যে গুটিকতক বীর্যবান ও গন্য মানুষ মাত্রই আমাদের অন্তর্লোকে শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। তাদেরই জীবন সার্থক, তাঁদেরই ধন্য। বীর্যবান ও গণ্য মানুষেরা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য সর্বদাই ছিলেন তৎপর। তারা প্রাণ যাবার ভয়ে ভীত না হয়ে , মানবকল্যাণের বাণীকে প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য বিনিদ্র রজনী অতিবাহিত করেছেন, লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত। মানুষ যদি মানুষের কাছে। স্মরণীয়, বরণীয় ও শ্রদ্ধাভাজন হতে না পারে তার সাথে অন্য প্রাণীর পার্থক্য কোথায়? যারা পৃথিবীতে অলস, শ্রম-বিমুখ তারা কেবল নিজেদের জীবিকা সন্ধান ও অর্জন করে কিছুকাল পরেই বিলীন হয়।
আমাদের জীবন নশ্বর। কিন্তু মহৎ কর্মের দ্বারা এ নশ্বর জীবনকে অবিনশ্বর ও অমর করে তােলা যায়। মহৎ মানবের মৃত্যু আছে।বটে, কিন্তু তার আত্মার মৃত্যু নেই। তারা যুগ যুগ ধরে মানুষের অন্তর্লোকে সম্মানিত অমরত্ব প্রাপ্ত হন। | জন্ম-মৃত্যু, যাওয়া-আসা মানুষের জীবনের এক চিরন্তন লীলা। শ্রদ্ধাভাজন, বীর্যবান মানুষেরা এ সত্যকে স্বীকার করে নিয়ে মানবজীবনকে মহত্ত্বের আদর্শে সমৃদ্ধ করার জন্যে শ্রান্তিহীন যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। তাঁদের এ যুদ্ধ ছিল , বৃহত্তর মানবতার কল্যাণে নিয়ােজিত। তাঁদের এ সংগ্রামের মূলে ছিল জগতের দুর্লভ মহিমার অনুসন্ধান। কারণ তাঁরা জানতেন জগতে কোন কিছুই অবিনশ্বর নয় , বৃহত্তর মানবতার কল্যাণের লক্ষ্যে উৎসর্গীকৃত যে জীবন সে জীবনই হল মহিমান্বিত জীবন।
মন্তব্যঃ জগতে মহিমানিত হওয়ার জন্যে আমাদের সংগ্রামী হওয়া উচিত। আমাদের সবাইকে বীর্যবান মহাপুরুষদের জীবন অনুসরণ করা উচিত, যার প্রতিফলনে বিশ্বকল্যাণে ত্বরান্বিত এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। মানবকল্যাণে জীবন উৎসর্গ করার মধ্যেই রয়েছে সত্যিকারের আনন্দ।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।