ইসলাম ও জীবনজিজ্ঞাসা

ইসলামিক প্রশ্ন উত্তর পর্ব ১ – শায়খ আহমাদুল্লাহ

5/5 - (1 vote)
ইসলামিক প্রশ্ন উত্তর পর্ব ১ - শায়খ আহমাদুল্লাহ
ইসলামিক প্রশ্ন উত্তর পর্ব ১
উত্তরদাতা – শায়খ আহমাদুল্লাহ
 
প্রশ্নঃ মহিলাগণ নামায পড়ার সময় শরীরের কতোটুকু অংশ পর্দার বাহিরে রাখতে হবে?
উত্তরঃ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। উত্তর হল পুরা শরীর পর্দার ভিতরে রাখতে হবে। বেশিরভাগ মহিলাদের নামায হয় না শুধুমাত্র সতর ঢাকার ফরযটা লঙ্ঘন করার কারণে। যদি গলা খোলা থাকে, হাতের গোছা খোলা থাকে, গলার কাঁধ খোলা থাকে এমনকি চুল খোলা থাকে তাহলে নামায হবে না। মুখমণ্ডল, দুই হাতের কব্জি, এবং পায়ের পাতা ছাড়া বাকি সব অঙ্গ ঢেকে রাখতে হবে।
প্রশ্নঃ ফেসবুকে জন্মদিনে উইশ করা কতোটুকু শরীয়ত সম্মত?
উত্তরঃ জন্মদিন আসলে খুশী হওয়ার কারণ নাই বরং আফসোস করা উচিত কারণ জীবন থেকে একটা বছর আপনার চলে গেল। জন্মদিন আসলে আমরা পাগল হয়ে যাই। কেক কাটি। আসলে জন্মদিনে উইশ কেক কাটা এগুলো ইসলামের শিক্ষা হতে পারে না। জন্মদিন উপলক্ষে যদি আপনাদের কিছু করতে মন চায় তাহলে রোজা রাখতে পারেন। নবী করীম (সাঃ) প্রতি সোমবার রোজা রাখতেন কারণ তিনি সোমবার দিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।
প্রশ্নঃ পর্দার পরিপূর্ণ বিধান কি?
উত্তরঃ মেয়েদের জন্য পর্দা করা ফরয। আর ছেলেদের জন্য চক্ষু সংযত করা পর্দার মধ্যে পরে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্‌ বলেছেন – “হে রাসুল আপনি বলে দিন মুমিন পুরুষদেরকে, তারা যেন দৃষ্টিকে সংযত করে।”
প্রশ্নঃ মাজারে ও পীরের কাছে যাওয়া ঠিক হবে কিনা?
উত্তরঃ ভাই, মাজারে যাবেন কবর যিয়ারতের নিয়তে। কিন্তু সেটাও দূর থেকে সফর করে যাওয়া যাবে না। হাদিসে আসছে তিনটা মসজিদে দূর থেকে সফর করা যায় এবং এর জন্য সওয়াব আছে। সেটা হল মক্কার মসজিদে হারাম, মদিনার মসজিদে নববি, ফিলিস্তানের বায়তুল মুকাদ্দাস। এই তিনটি মসজিদ ছাড়া সওয়াবের নিয়তে সফর করা জায়েজ নাই। তবে হ্যাঁ, আপনি দ্বীন শিখার জন্য ব্যবসার জন্য আপনি চাইলে যেতে পারেন। অতএব, কোন মাজারে সফর করে যাওয়ার  তবে হ্যাঁ, যদি আপনি মাজারের কাছাকাছি গেলেন, সেখানে আল্লাহর কোন ওলী বা নেককার মানুষের কবর আছে আপনি কবর জিয়ারত করলেন এটা অবশ্যই ভালো। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন – “একসময় তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছি, এখন তোমারা কবর জিয়াতর কর। কারণ কবর জিয়াতর করলে তোমাদের আখিরাতের কথা স্মরণ হবে।” এইজন্য কবর জিয়ারত করা সুন্নত। মাজারে কবর জিয়ারতের জন্য যেতে পারেন তবে কোন কিছু পাওয়ার আসায় গেলে তা শিরিক হবে।
প্রশ্নঃ যানবাহনে থাকা অবস্থায় নামাজ কীভাবে পড়ব?
উত্তরঃ যানবাহনে থাকা অবস্থায় নামাজের সময় হলে আপনার উচিত হবে বিরতিতে নেমে যাওয়া। তাই যানবাহনে উঠার আগে আগেই জেনে নিবেন নামাজের জন্য বিরতি দিবে কিনা। যদি না দেয় তাহলে সে যানবাহনে প্রয়োজনে যাবেন না। আমাদের দেশে অনেকে মনে করেন গাড়িতে বসে বসে নামাজ পড়া জায়েজ আছে। বসে বসে নামাজ পড়া ঐ ব্যক্তির জন্য জায়েজ আছে যার দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই।
প্রশ্নঃ ছেলে-মেয়ের অন্যায়ের ভার পিতা-মাতাকে বহন করতে হবে কিনা?
উত্তরঃ এর প্রথম উত্তর হল না। কারণ আল্লাহ্‌পাক কুরআনে বলেছেন – “কারোও বোঝা অন্য কেউ বহন করবে না।” (সূরা ফাতির ,আয়াত ১৮)। তবে পিতা-মাতার ত্রুটির কারণে যদি সন্তান অন্যায় কাজ করে তার জবাবদিহিতা অবশ্যই পিতা-মাতাকে করতে হবে।
প্রশ্নঃ মহিলারা হাঁটে-বাজারে যাবে কিনা বা ঠিক কিনা?
উত্তরঃ ‘(হে নারীগণ!) তোমরা তোমাদের ঘরের (বাড়ির চতুর্সীমানার) ভেতর অবস্থান কর এবং বাইরে বের হয়ো না। যেমনিভাবে ইসলামপূর্ব জাহিলী যুগের মেয়েরা বের হতো।’ (সুরা আহযাব, আয়াত : ৪৩)। অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন : ‘(হে নবী!) আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, যখন কোনো প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয়, তখন তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়। এমনকি চেহারাও যেন খোলা না রাখে। তারা যেন বড় চাদরের ঘোমটা দ্বারা নিজেদের চেহারাকে আবৃত করে রাখে।) ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’ (সুরা আহযাব, আয়াত : ৬০)। অতএব, যদি প্রয়োজনে যেতেই হয় তাহলে পর্দা করে যাবে। তবে না যাওয়াই উত্তম।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

One Comment

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button