পড়িলে বই আলােকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই
আলাে-অন্ধকার নিয়েই এ দুনিয়া, বিশ্বচরাচর ও মহাবিশ্ব। আলাে আছে বলেই আমরা অন্ধকারের অস্তিত্ব বুঝি। আলাে আমাদের পথ দেখায়, বেঁচে থাকার শক্তি যােগায়, কর্ম প্রেরণার উৎস। পক্ষান্তরে, অন্ধকার আমাদের ঘুম পাড়ায়। জীবন ও কর্মহীনতার দ্যোতক অন্ধকার। তেমনি বই আলাের প্রতীক। বই পড়লে মানুষের জীবন আলােকিত হয়। তার জীবনে সমস্ত অন্ধকার বিদূরিত হয়। যিনি বই পড়েন শত অন্ধকারেও তিনি পথ হারান না। জ্ঞানের বাতিঘর বই’ই তাকে পথ দেখায়। চলার পথে আমাদের জীবনে অনেক সময় দিবসের সূর্য অস্ত যাবার মতােই অন্ধকার নেমে আসে আমরা তখন পথ হারিয়ে ফেলি-অন্ধতা, অজ্ঞতা, কুসংস্কার, বুজুর্গি চারপাশ থেকে আমাদের ঘিরে ধরে। যিনি বই পড়েন অথবা বইয়ের সঙ্গে যার সর্বক্ষণ সংযােগ আছে তিনি সর্বদা আলাের সঙ্গে থাকেন বলে তাকে অন্ধকার স্বরূপ অজ্ঞতা, কুসংস্কার, ভণ্ডামি, বুজুর্গি কোনাে কিছু স্পর্শ করতে পারে না। বই পড়ার কারণে বই পড়ুয়া দিবসের সূর্যালােকের মতােই চারদিক স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন রূপে দেখতে পান। কিন্তু যিনি বই পড়ে না তিনি অন্ধ ও বধির বলে তার চারপাশে তিনি কোনাে কিছু স্পষ্ট দেখতে পান না। সাদা, হলুদ, নীল, কমলা তার কাছে সব সমান-এক অপার্থিব রূপ। ‘অন্ধের হাতি দেখা’ তার কাছে বড় প্রত্যক্ষণীয় বিষয়। কিন্তু যিনি বই পড়েন (আলােকিত হন বলে) হাতিকে তিনি স্পষ্ট দেখতে পান তার সামনে, পেছনে, ওপরে, নিচে সব দিক মিলিয়ে এক ঐতরেয় রূপ প্রত্যক্ষ করেন। তিনি কখনাে বলেন না হাতি কলাগাছের মতাে, কুলার মতাে বা লাঠির মতাে।
একটি বই অনন্ত যৌবনা। বিখ্যাত ফারসি কবি ওমর খৈয়াম (Omar Khayyam) বলেছেন-
রুটি, মদ ফুরিয়ে যাবে
প্রিয়ার কালাে চোখ দুটো
ঘােলাটে হয়ে আসবে
কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা।
বই জ্ঞানের বাহন এবং আনন্দের সঙ্গী বলে খৈয়াম স্বর্গেও বই সঙ্গে নিতে চেয়েছেন। যিনি নিয়মিত বই পড়েন তিনি জ্ঞানী হন। আর জ্ঞানীরা কখনাে সমাজে অন্যায়, অপকর্ম করে না, করতে পারে না। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, “Idle brain is devil’s workshop.” আলস্য জীবনে অন্ধকার ডেকে আনে।
আর আলস্য দূর করার উত্তম বন্ধু হলাে বই। বই মানুষের জীবন থেকে অজ্ঞতা দূর করে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। একজন মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষে পরিণত করে। তাই “পড়িলে বই আলােকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই।”
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
