একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের জীবনকাহিনীর ওপর একটি অনুচ্ছেদ
একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের জীবন
একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের জীবন খুবই করুণ। সে কঠোর পরিশ্রম করে কিন্তু সচ্ছল জীবন যাপন করতে পারে না। তবুও সে জীবনযুদ্ধের এই অমসৃণ পথে নিরন্তর সংগ্রাম করে যায়। পারুল নামের একজন গার্মেন্টস শ্রমিক আমাদের এপার্টমেন্টের নিকট বাস করে। তার প্রাত্যহিক জীবন খুব ভােরে শুরু হয় এবং প্রায় রাত দশটায় শেষ হয়। গৃহের কাজ শেষ করে সে প্রায় সকাল ৭টায় তার কর্মস্থলের উদ্দেশে যাত্রা করে। সাধারণত সে তার সহকর্মীর সাথে পায়ে হেঁটে কারখানায় যায়। মাঝে মাঝে কারখানায় পৌছার জন্য তাকে একটি জনাকীর্ণ বাসে দ্রুত উঠতে হয়। তার গন্তব্যস্থলে পৌছার পথে ভবঘুরে ও দুবৃত্তদের অশ্লীল শব্দ ও খারাপ মন্তব্যও অত্যন্ত নীরবে তাকে সহ্য করতে হয়। তার কারখানার পরিবেশ স্বাস্থ্যকর নয়। সে ঘিঞ্জি কক্ষে কাজ করে। মাঝে মাঝে সে সারাদিন পায়ের ওপর ভর দিয়ে নিরন্তর কাজ করে যায়। সে কারখানায় তার সহকর্মীদের সাথে নিম্নমানের মধ্যাহ্নভােজ করতে মাত্র কিছু সময় পায়। যদিও সে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করে, বিনিময়ে সে অত্যন্ত অল্প মজুরি পায়। এই অল্প আয়ে সে তার অসুস্থ মা-বাবা এবং ছােট দুই ভাইসহ চার সদস্যবিশিষ্ট পরিবারের ভরণ-পােষণ করে। দীর্ঘ সময় কাজ করতে হয় বলে অনেক সময় সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অত্যধিক কাজে সে অভ্যস্ত। তবুও মাঝে মাঝে সে ক্লান্ত এবং বিরক্ত হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে সে তার পুরুষ সহকর্মীদের দ্বারা বিরক্ত হয়। কখনও কখনও মনে হয় তার জীবন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন তার বয়স ১৮ বছর। একজন গার্মেন্টস শ্রমিকের প্রতি আমাদের সমাজ সহানুভূতিশীল আচরণ দেখায় না। প্রথা অনুযায়ী সম্ভবত সে তার কোনাে সহকর্মী বা একজন রিকশাচালকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে এবং শােচনীয় জীবন চালাতে চেষ্টা করবে।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
