![]() |
পৌরনীতি ও নাগরিকতা এসএসসি ২০২১ অষ্টম সপ্তাহ |
২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের “পৌরনীতি ও নাগরিকতা” অষ্টম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর।
অ্যাসাইনমেন্ট নম্বরঃ ৫
অধ্যায়ঃ ষষ্ঠ
অধ্যায়ের শিরোনামঃ বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা
অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনামঃ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগের ভূমিকা
নিধারিত কাজঃ
“পৌরনীতি ও নাগরিকতা” এসএসসি ২০২১ অষ্টম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট
ক) বিচার বিভাগের গঠনঃ
বাংলাদেশ সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে বিচার বিভাগ অন্যতম। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে বিচার বিভাগের মর্যাদা ও অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রুটিনমাফিক বিচার কাজ ছাড়াও সংবিধানকে ব্যাখ্যা করা, নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, অপরাধীর শাস্তির বিধান, সংবিধান বহির্ভূত বিধানকে অবৈধ ঘােষণা করা এবং দুর্বলকে সবলের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিরপেক্ষ বিচার বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। বিচার বিভাগ আইনের অনুশাসন ও দেশের সংবিধানকে অক্ষুন্ন রাখে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সুপ্রিম কোর্ট, অধস্তন আদালত এবং প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল নিয়ে গঠিত।
সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত। সুপ্রিম কোর্টে একজন প্রধান বিচারপতি রয়েছেন, যাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বলা হয়। তিনি রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিযুক্ত হন। প্রত্যেক বিভাগের জন্য যতজন বিচারক প্রয়ােজন ততজন বিচারককে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত। প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের দুই বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ােগ দেন। সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিগণ বিচারকার্য পরিচালনা করেন। সুপ্রিম কোর্টে বিচারক হতে হলে তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে কমপক্ষে ১০ বছর এডভােকেট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে অথবা বাংলাদেশে বিচার বিভাগীয় পদে ১০ বছর বিচারক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে কর্মরত থাকতে পারেন।
খ) বিচার বিভাগের ক্ষমতাঃ
আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ মিলে সুপ্রিম কোর্ট সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে দেশের সংবিধান ও নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে।
অধস্তন আদালতঃ সুপ্রিম কোর্টের অধীনে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় বিচার বিভাগের অধস্তন আদালত আছে। অধস্তন আদালতগুলাে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করে।
জেলা জজের আদালতঃ জেলা আদালতের প্রধান জেলা জজ তার কাজে সহায়তার জন্য আছে অতিরিক্ত জেলা জজ ও সাব-জজ। এই আদালত জেলা পর্যায়ে দেওয়ানি (জমিজমাসংক্রান্ত, ঋণচুক্তি ইত্যাদি) ও ফৌজদারি (সংঘাত, সংঘর্ষ সংক্রান্ত মামলা পরিচালনা করে।
সাব জজ আদালত ও সহকারী জজ আদালতঃ জেলা জজের আদালতের অধীনে প্রত্যেক জেলায় সাব জজ ও সহকারী জজ আদালত আছে। এগুলাে জেলা জজ আদালতকে মামলা পরিচালনায় সহায়তা করে। এছাড়া বিভিন্ন মামলাও পরিচালনা করে থাকে।
গ্রাম আদালতঃ বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার সর্বনিম্ন আদালত হলাে গ্রাম আদালত। এটি ইউনিয়ন পর্যায়ে অবস্থিত। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিবাদমান দুই গ্রুপের দুজন করে মােট পাঁচজন সদস্য নিয়ে গ্রাম আদালত গঠিত। যেসব মামলা স্থানীয় পর্যায়ে বিচার করা সম্ভব, মূলত সেগুলাের বিচার এখানে করা হয়। ছােটখাটো ফৌজদারি মামলার বিচার এ আদালতে করা হয়ে থাকে।
বিচার বিভাগ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যম, অগ্রপথিক ও কর্ণধার। আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণীত হয়েছে। আর এসকল বিষয়ের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব বিচার বিভাগের হাতে। বিচার বিভাগ মৌলিক অধিকারের সাথে সামঞ্জস্যহীন আইনকে বাতিল বলে গণ্য করতে পারে। সংবিধান ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিচার বিভাগ যেকোন বিধি-বিধানকে অবৈধ ও বিধি বহির্ভূত ঘােষণা করতে পারে। বিচার বিভাগ হলাে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের গুরুত্বপূর্ণ মানদন্ড।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
