
প্রিয় ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, তোমরা ইতোমধ্যেই তৃতীয় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট হাতে পেয়েছো। দীর্ঘ লকডাউনের পর তোমাদের চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ ষষ্ঠ শ্রেণীর চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট .২০২১ এর চারু ও কারুকলা এর নির্ধারিত কাজ এবং নমুনা উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছি। সর্বপ্রথমে চলো দেখে নেয়া যাক চারু ও কারুকলা চতুর্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টএ কি কি থাকছে।
তোমাদের চারু ও কারুকলা পাঠ্য বইয়ের প্রথম অধ্যায় “চারু ও কারুকলার পরিচয়” থেকে নির্ধারিত কাজ দেওয়া হয়েছে।
নির্ধারিত কাজ

আদিম মানুষের ছবি আঁকা ও বর্তমান সময়ের ছবি আঁকার তুলনামূলক বর্ণনা দাও।
নমুনা উত্তর
মনের ভাব প্রকাশের ভিন্ন এক মাধ্যম হলো ছবি। ছবি আঁকার জন্য ও ছবি ফুটিয়ে তোলার জন্য রয়েছে নানা রকম পেন্সিল কলম,কালি ছুরি, কাঁচি,হাতুড়ি, বাটাল ইত্যাদি। রয়েছে নানা ধরনের তুলি। বর্তমানে ছবি আঁকার জন্য যে সকল উপকরণ পাওয়া যায় আদি যুগে সেসব উপাদান ছিল না। কিন্তু আদিযুগের মানুষরাও ছবি আঁকতো আর তাদের আঁকা ছবি দেখেই আজ আমরা জানতে পেরেছি তাদের জীবন ধারণের কথা।
আদি মানুষরা বনে গুহায় বসবাস করত। তারা ঠিকমতো ঘরবাড়ি তৈরি করা, চাষাবাদ ফসল ফলানো এসব কিছুই জানতো না। তারা পশু শিকার করে মাংস খেয়ে জীবন ধারণ করতো। তারা দলবল নিয়ে গুহায় বাস করত আর সেই গুহার দেয়ালে ছবি আঁকতো। আদিম মানুষ ঘর সাজাবার জন্য ছবি আঁকতো না কারণ তারা থাকতো গুহায়। ছবি আঁকা আদিম মানুষের কাছে ছিল একটা জাদু বিশ্বাসের মতো। তারা যেসব পশু শিকার করত তার ছবি আঁকতো আর পশুর গায়ের তীর বা বর্ষা এইসব এঁকে দিত। এর অর্থ হলো শিকার করার হাতিয়ার দিয়ে পশুটিকে শিকার করা হলো। শিকারে বের হওয়ার আগে এসব ছবি এঁকে শিকারে বের হতো। তাদের বিশ্বাস ছিল যে শিকারে আজ সফল হবোই। আদিকালের মানুষ ছবি আঁকার জন্য তুলি ব্যবহার করত। শক্ত পশুর হাড় সুচালো করে তা দিয়ে আঁচড় কেটে রেখা টানত। জীবজন্তুর পশম একসঙ্গে বেঁধে তুলি বানাত। আর রং তৈরি করা হতো নানা রঙের মাটির সাথে চর্বি মিশিয়ে। যদিও আদি মানুষের ছবি আঁকার উপাদানগুলো ছিল খুবই অপ্রতুল কিন্তু তাদের আঁকা ছবির রং, রেখা এখনো সুন্দর অক্ষত রয়েছে। তারা পশু শিকারের জন্য ব্যবহৃত পাথরের গায়ে আঁচড় কেটে নানা রকম ছবি ফুটিয়ে তুলতো। আর এভাবেই আদিম মানব গোষ্ঠী চারু ও কারুশিল্প সূচনা করেছিল।
বর্তমান সময়ে ছবি আঁকার জন্য আদি মানুষের মত এতো কষ্ট করতে হয়না। এখন ছবি আঁকার জন্য নানা ধরনের কাগজ তৈরি হচ্ছে, ক্যানভাস তৈরি হচ্ছ, ধাতব প্লেট বা জমিন তৈরি করা হচ্ছে। মাটির ফলক অনেক উন্নত হয়েছে। ছবি আঁকার জন্য এখন অনেক রকম রং ব্যবহার করা হয়। পানিতে মিশিয়ে যে রং তৈরি করা হয় জলরং বলে। মোম মেশানো এক ধরনের রং এর কাঠি তৈরি হয়েছে যার নাম প্যাস্টেল রং। রঙের সাথে তেল ও তারপিন মিশিয়ে বড় বড় শিল্পীরা ক্যানভাসে বা কাঠের পাটাতনে যে ছবি আঁকেন তার নাম হলো তৈলরং বা তেলরং। বর্তমানে ছবি আঁকার জন্য অ্যাক্রেলিক রং এক নামে এক ধরনের রংব্যাবহার করা হয়। যার মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি ছবি আঁকা যায়। এই রং তেল ও পানিতে মিশিয়ে দুইরকম ভাবে ব্যবহার করা যায়। আমাদের দেশে এই ধরনের রঙ খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
পরিশেষে বলা যায়, মানবসভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে যেমন মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন এসেছে। তেমনই ছবি আকার ক্ষেত্রেও এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
