মুসলিম উম্মাহর জন্য জুমার (শুক্রবার) দিনের গুরুত্ব অনেক। আজ আমরা জুমার দিনের দোয়া, আমল সমূহ ও ফযিলাত নিয়ে হাদিসের আলোকে আলোচনা করব।জুমার দিনে...
মুসলিম উম্মাহর জন্য জুমার (শুক্রবার) দিনের গুরুত্ব অনেক। জুমার দিনে অল্প আমলে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়। জুমার দিনে বেশি করে নফল ইবাদাত করা যায়, যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। সপ্তাহের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ দিন জুমাবার। দিনটির ফজিলত সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৪)
![]() |
ছবিঃ ইন্টারনেট |
জুমার দিনে কি কি আমল করব?
জুমার দিনে নির্দিষ্ট কোন আমল নেই। তবে হাদিসে বেশ কিছু আমলের কথা আছে। যেমনঃ
- হযরত আবু উমামা রা: থেকে বর্ণিত নবীজি (সা) বলেছেনঃ ‘আমার ওপর জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পড়ো। কারণ, আমার উম্মতের দরুদ জুমার দিন আমার কাছে পৌঁছানো হয়।'
➔ দুরুদ শরীফ - দুরুদে ইব্রাহিম বাংলা উচ্চারণ - হযরত আনাস রা: বলেন, নবীজি (সা) বলেছেন যে তোমরা জুমার দিনে বেশি বেশি দরুদ পড়ো৷ কারণ, জিবরাঈল আ: এইমাত্র আল্লাহ তায়ালার বাণী নিয়ে হাজির হলেন। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, পৃথিবীতে যখন কোনো মুসলমান আপনার ওপর একবার দরুদ পড়ে, আমি তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করি এবং আমার সব ফেরেশতা তার জন্য দশবার ইস্তেগফার করে। - তারগিব : ৩/২৯৯
- দ্রুত মসজিদে যাওয়া এই দিনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। মহান আল্লাহ বলেন- ‘হে মুমিনরা, জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমআ, আয়াত : ৯)
- সুরা কাহফ তেলাওয়াত করা জুমার দিনের বিশেষ একটি আমল। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ তেলাওয়াত করবে তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর উজ্জ্বল করা হবে।’ (আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)
- জুমার দিন আল্লাহ বিশেষ কিছু মুহূর্তে দোয়া কবুল করে থাকেন। হাদিসে বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ মুহূর্ত এমন আছে, যখন আল্লাহ মুসলমানের যেকোনো দোয়া কবুল করেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮)
- হযরত আলি (রাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি নবীজি সা:-এর ওপর জুমার দিন ১০০ বার দরুদ পড়বে, কেয়ামতের দিন সে এমন অবস্থায় উঠবে যে, তার চেহারায় নূরের জ্যোতি দেখে লোকেরা বলাবলি করতে থাকবে এই ব্যক্তি কী আমল করেছিল! - কানজুল উম্মাল : ১৭৪
- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করে এবং সুগন্ধি ব্যবহার করে যদি তার কাছে থাকে, তারপর জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের টপকে সামনের দিকে না গিয়ে নির্ধারিত নামাজ আদায় করে, তারপর ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে, তাহলে তার এই আমল আগের জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সমস্ত সগিরা গুনাহর জন্য কাফ্ফারা হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)
উপরের হাদিস থেকে এটা স্পষ্ট যে, জুমার দিনের আমলের ফজিলত অনেক। বেশি বেশি দুরুদ শরীফ পড়ার কথা বলা হয়েছে অধিকাংশ হাদিসে। তাই আমাদের উচিত হাদিসের আলকে আমলগুলো করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
মন্তব্যগুলো দেখান