বাংলা ব্যাকরণ

ধ্বনি কাকে বলে? এর প্রকারভেদ

Rate this post

 

ধ্বনি কাকে বলে এর প্রকারভেদ

ধ্বনি কাকে বলে?

আমরা সামাজিক জীব হিসেবে ভাষা ব্যবহার করে মনের নানান ভাব প্রকাশ করি। মূলত আমরা কতিপয় ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি প্রকাশ করি। আর তা করি বাগ্‌যন্ত্র দ্বারা। বাগ্‌যন্ত্র হলাে আমাদের কতকগুলাে বাক্‌প্রত্যঙ্গের সমন্বিত রূপ। অর্থাৎ মানুষের বাক্‌প্রত্যঙ্গগুলােকে একত্রে বা সমন্বিতভাবে বাগ্‌যন্ত্র নামে অভিহিত করা হয়। আর এ কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, বাগ্‌যন্ত্র ছাড়া ধ্বনি তথা অর্থপূর্ণ ধ্বনি উচ্চারণ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে কেউ কেউ প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারেন পশু-পাখির তো বাগ্‌যন্ত্র তাহলে তারা কেন অর্থপূর্ণ ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি উচ্চারণ করতে পারে না? এ প্রশ্নের সহজ উত্তর হলাে- মানুষের বাগ্‌যন্ত্র যতটা বিকাশ লাভ করেছে বা পূর্ণতা পেয়েছে পশু-পাখির বাগ্‌যন্ত্র ততটা বিকাশ লাভ করেনি বা পূর্ণতা পায়নি। মােটকথা হলাে এই যে, আমরা যে কথা বলি বা শুনি তা মূলত কতকগুলাে ধ্বনির রূপ।

ধ্বনির প্রকারভেদ

পৃথিবীর সব ভাষারই বাক্‌প্রবাহ তথা পূর্ণাঙ্গ একক আছে (বৃহত্তম একক বা পূর্ণাঙ্গ একক হলাে বাক্য)। আর কোনাে ভাষার বাক্‌প্রবাহকে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা কতকগুলাে মৌলিক ধ্বনি (Sound) পাই। বাংলা ভাষাতেও কতকগুলাে মৌলিক ধ্বনি আছে। বাংলা ভাষার মৌলিক ধ্বনিগুলােকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ

স্বরধ্বনি

যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুসতাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোনাে প্রকার বাধা পায় না, তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি (Vowel Sound)। যেমন- অ, আ, ই, উ, এ ইত্যাদি। 

স্বরধ্বনি সম্পর্কে ভাষাবিজ্ঞানীদের অভিমত নিম্নরূপঃ

A vowel (in normal speech) is defined as a voiced sound in forming which the air issues in a continuous stream through the pharynx and mouth, there being no obstruction and no narrowing such as would audible friction. (Daniel Jones, 1999: 23) (এক ধরনের বাগ্‌ধ্বনি হচ্ছে স্বর, যার উৎপাদনে ফুসফুস-আগত বায়ুপ্রবাহ মুখের মধ্যে বা গলায় কোথাও কোনােভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয় না এবং যা সাধারণত স্বরযন্ত্রের অনুরণনের ফলে উচ্চারিত হয়।)

A speech sound in which the airstream from the lungs is not blocked in any way in the mouth or throat, and which is usually pronounced with the vibration of the vocal cords. (Jack, John Patt, Richards, Heidi Weber, 1987: 309) (স্বরধ্বনি হচ্ছে সেই ঘােষধ্বনি, যে ধ্বনি উচ্চারণে মুখ ও গলনালি দিয়ে নির্বিঘ্নে বায়ুপ্রবাহিত হওয়ায় কোনাে বাধার বা সংকুচিত অবস্থার সৃষ্টি হয় না এবং কোনাে ক্ষতিগ্রাহ্য ঘর্ষণ শােনা যায় না।)

ব্যঞ্জনধ্বনি

যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুসতাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও না কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় কিংবা ঘর্ষণ লাগে, তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি (Consonant Sound)। যেমনঃ ক্‌, চ্‌, ট্‌, ত্‌, প্‌, ব্‌, , শ্‌ ইত্যাদি।

ব্যঞ্জনধ্বনি সম্পর্কে ভাষাবিজ্ঞানীদের অভিমত নিম্নরূপঃ

ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণে মুখবিবরে বা ঠোটে জিহ্বার সাহায্যে বাধার সৃষ্টি হয়। (রফিকুল ইসলাম)। 

ব্যঞ্জনধ্বনি গঠনের সময় শ্রুতিগ্রাহ্য শব্দ উৎপাদিত হয় এবং সেই সঙ্গে ফুসফুস থেকে বাতাস বেরােনাের সময় বিভিন্ন বাকপ্রত্যঙ্গের সংস্পর্শের জন্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে এবং বাতাস ঘষা খেয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। (মনজুর মােরশেদ)

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button