আধুনিক প্রযুক্তি বিজ্ঞান অনুচ্ছেদ
আধুনিক প্রযুক্তি বিজ্ঞান অনুচ্ছেদ লিখন ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ শ্রেণি
আধুনিক প্রযুক্তি বিজ্ঞান
বেতারের মতাে আর একটি, ব্যাপক জনসংযােগের প্রযুক্তি মাধ্যম হলাে টেলিভিশন। বিশ শতকের ছয়-এর দশকের আগে টেলিভিশনের পালা ছিল সীমিত টেলিভিশনের ছবি দেশ থেকে দেশান্তরে পৌঁছতে পারতাে না। কিন্তু মহাকাশ সংক্রান্ত প্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতির সাহায্যে মানুষ সেই বাধা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে টেলিভিশনের ছবি মুহূর্তের মধ্যে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে। মহাকাশ প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে যােগাযােগ ব্যবস্থারও প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক যােগাযােগ ব্যবস্থার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে হয়ে থাকে। মহাকাশ প্রযুক্তির আবহাওয়াবিদরা এখন অনেক বেশি নির্ভরতার সঙ্গে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে পারছেন। তারপর আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার কম্পিউটার। জটিল গণনার কাজ সহজে ও অল্প সময়ে এর দ্বারা সমাধান হয়। মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তিবিদ্যার বিস্ময়কর অগ্রগতির ফলে কম্পিউটার যন্ত্রের আকার ও মূল্য এখন আগের থেকে অবিশ্বাস্য রকম কমে গেছে। শিল্পের নানা ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহারে কেবল যে উৎপাদনের পরিমাণই বেড়েছে তাই নয়, উৎপন্ন সামগ্রীর গুণগত উৎকর্ষও বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। এই সবকিছুর মূলে রয়েছে ইলেকট্রনিক্স। বস্তুত বিজ্ঞানের এ শাখাটির প্রয়ােগ ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যা অনেক ক্ষেত্রেই অচল। কৃষিক্ষেত্রে উন্নত সার ও বীজ ব্যবহারের ফলে ফসলের ফলন অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বস্ত্রশিল্পে কৃত্রিম তন্তু সৃষ্টির ফলে মানুষ আজ আর কেবল প্রকৃতিজাত বস্তুর ওপর নির্ভরশীল নয়। কেননা, প্রযুক্তিবিদ্যার জাদুদণ্ডে সৃষ্ট কৃত্রিম সম্ভার আজ তার হাতে। এমনিভাবে প্রযুক্তি বিজ্ঞানের অবদান আজ মানবজী বিস্তার লাভ করেছে। আধুনিক প্রযুক্তি মানুষেরই মেধা এবং পরিশ্রমের দ্বারা সৃষ্ট। তাই মানুষেরই লক্ষ রাখা উচিত, যাতে সেই প্রযুক্তি প্রয়ােগের ফলে কোনাে বিশেষ দেশ নয়, সামগ্রিকভাবে মানব সমাজের কল্যাণ সাধিত হয়ে গড়ে ওঠে মৈত্রভাব। আর তখনই প্রযুক্তিবিদ্যার সার্থকতা হয়ে ওঠবে ভাস্বর ও মহিমান্বিত।