বাংলা রচনা

রচনাঃ সৎসঙ্গ (SSC HSC JSC)

1/5 - (1 vote)

সৎসঙ্গ অথবা, সৎসঙ্গী নির্বাচন অথবা, সৎসঙ্গের প্রয়োজনীয়তা রচনা ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ ১২ শ্রেণী SSC HSC JSC

ভূমিকা

মানুষ সামাজিক জীব। সে প্রতিনিয়ত অন্যের সঙ্গ ও সান্নিধ্য কামনা করে আসছে। সভ্যতার শুরু থেকে মানুষ সংঘবদ্ধভাবে জীবন যাপন করে আসছে। তাই ব্যক্তিজীবনের সার্থকতা নির্ভর করে সমাজ ও পরিবেশের ওপর। সেই সমাজ ও পরিবেশ মানুষের ব্যক্তিত্ব দ্বারাই প্রভাবিত হয়। জীবনের যথার্থ ও সুষ্ঠু বিকাশের জন্য সৎ সাহচর্যের বিশেষ প্রয়ােজন। সৎসঙ্গ মানুষের জীবনকে পরিপূর্ণতার দিকে উন্নীত করে, পক্ষান্তরে অসৎসঙ্গ তার ব্যক্তিত্ব, প্রতিভা, সুনাম এমনকী সাফল্যকেও ধ্বংস করে। একারণে সৎসঙ্গ এবং অসৎসঙ্গ এ দুয়ের মধ্যকার পার্থক্যটা বুঝে সুচিন্তিতভাবে সৎসঙ্গকে বেছে নিতে হবে। আর সৎসঙ্গকে বেছে নিতে হলে প্রথমেই নিজেকে সৎ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। 

সৎসঙ্গ কী ও তার বৈশিষ্ট্য

ব্যক্তি তার মানসিক ও সামাজিক অভাব পূরণ করার জন্য যে-সব সঙ্গীর সঙ্গে নিত্য চলাফেরা ও ওঠাবসা করে, তাদের চরিত্র যদি পবিত্র এবং সুন্দর হয়, তাহলে তাদের সঙ্গই সৎসঙ্গ। সহজ কথায় বলা চলে, সৎসঙ্গ বলতে বােঝায় উত্তম চরিত্রের বন্ধুবান্ধব যাদের প্রভাব ও আদর্শে নিজের জীবন গড়ে তােলা যায়। আর উত্তম চরিত্র বলতে বােঝায়- সততা, সত্যনিষ্ঠা, প্রেম, পরােপকারিতা, দায়িত্ববােধ, শৃঙ্খলা, অধ্যবসায় ও কর্তব্যপালন ইত্যাদি। এগুলাে মানুষ যখন সহজে নিজের মধ্যে বিকশিত করে তােলে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার প্রতিটি কথা ও কাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়, তখন উত্তমচরিত্র তার স্বভাবের সঙ্গে সমীভূত হয়ে যায়। ফলে, দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক আচরণেও উত্তমচরিত্রের বৈশিষ্ট্যাবলি প্রকাশ পেতে থাকে। আর এ-পর্যায়ে গিয়ে ব্যক্তি তার চরিত্রকে একটি সম্পদ হিসেবে আবিষ্কার করে। সর্বোপরি একজন সৎসঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখতে হবে, তার মধ্যে নিচের গুণাবলি রয়েছে কি-না। নিচের এসব বৈশিষ্ট্যই সৎসঙ্গের বৈশিষ্ট্য : 

১. মানবিক গুণাবলির সমাহার হিসেবে ধৈর্য, সাহস, আনুগত্য, সততা, সৌজন্য, নির্ভরযােগ্যতা, কৃতজ্ঞতাবোেধ, সহজ অমায়িকতা, পরহিতব্রত ইত্যাদি গুণাবলি;
২. শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা, সহিষ্ণুতা, শিষ্টাচার ইত্যাদি সামগ্রিক আচার-আচরণ-অভ্যাস;
৩. দেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িকতা, জাতীয়তাবােধ, আন্তর্জাতিক সৌভ্রাতৃত্ব, মানবপ্রেম ইত্যাদি সংগঠিত ভাবাবেগ;
৪. হিংসা, বিদ্বেষ, কুটিলতা ইত্যাদি মানসিকতা পরিহার এবং বদ অভ্যাস বা প্রবৃত্তি দমন;
৫. ন্যায়বিচার, মানবকল্যাণ, পরহিতব্রত ইত্যাদি মানবিক গুণাবলিকে জীবনের চালিকাশক্তি হিসেবে গ্রহণ।

সৎসঙ্গ ও অসৎসঙ্গের প্রভাব

মানুষের চারপাশে যে জীবন নিয়ত আবর্তিত হয় তাতে আছে ভালাে-মন্দের সমাহার। কিন্তু জীবনের সার্থক বিকাশের জন্য প্রয়ােজন কেবল ভালাের দিক— মন্দ দিকগুলাে তাকে সচেতনভাবে পরিহার করে চলতে হবে। সে জন্য মন্দ সঙ্গ পরিত্যাগ করে উত্তম সঙ্গী জুটিয়ে নিয়ে জীবনে এগিয়ে যেতে হবে। ব্যক্তি-চরিত্রের ওপর তার সঙ্গী-সাথির প্রভাব অত্যন্ত প্রত্যক্ষ এবং প্রবল। এই সঙ্গীর চরিত্র যদি হয় অসৎ, নিয়মবিরুদ্ধ এবং কলুষিত তাহলে তার চরিত্রের মধ্যে এই খারাপ দিকগুলাের প্রভাব পড়বে এতে কোনাে সন্দেহ নেই।

অপরপক্ষে সঙ্গীর চরিত্র যদি নির্মল সুন্দর এবং পবিত্র হয় তাহলে তার প্রভাবেও ব্যক্তির নিজস্ব চরিত্র বিকশিত হওয়ার সুযােগ পায়। বস্তুত সৎসঙ্গের অভাবেই মানুষ আজ সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ফলে অসৎসঙ্গের সান্নিধ্যে এসে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিকেই তারা প্রাধান্য দিয়ে নানারকমের অত্যাচার, অনাচার ও দুর্নীতি করে চলেছে। ফলে সমাজে এসেছে অবক্ষয়। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই আজ মনুষ্যত্বের দীনতার চিত্র। বর্তমান সমাজব্যবস্থায় বড়দের কাছ থেকে ভালাে কিছু শেখার আশা করা যায় না। যুব সমাজকে নতুন চেতনায় উদ্দীপ্ত করার মতাে আজ কোনাে পরিকল্পনা নেই, ফলে তারা প্রতিনিয়ত অবক্ষয়ের দিকে অগ্রসরমান। একদিকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-কলহ, অপরদিকে অর্থনৈতিক দুর্দশা, ফলে শিক্ষাজগতে নৈরাজ্য, সমাজসেবার নামে নিজের স্বার্থ হাসিল এবং স্বেচ্ছাচারিতা যুবসমাজকে বিপথগামী করছে। আজ আমরা অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করি, সমাজে সমাজ-বিরােধীর যে সম্মান, যে প্রতিপত্তি, সেখানে একজন জ্ঞানী, সৎ মানুষের মূল্য তুচ্ছ। সততা সেখানে লাঞ্ছিত, অসহায়। বিবেক সেখানে বিবর্জিত। জ্ঞানী-গুণীরাও তাদের খাতির করে। রাজনৈতিক নেতাদের তারা ডান হাত। জঘন্য, নিষ্ঠুর কাজকর্ম করেও তারা আইনের চোখে নিরাপদ। প্রশাসন প্রয়ােজন মতাে ওদের ব্যবহার করে। কী তাদের মূলধন? তারা অনায়াসে মানুষ খুন করে, ডাকাতি করে, জনজীবনে ত্রাসের সৃষ্টি করে। এই মূলধন নিয়েই ওরা সমাজের বিশিষ্ট মানুষ। আজ তাদের সান্নিধ্যে এসে আমাদের যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে অগ্রসরমান। 

আমাদের কর্তব্য ও সৎসঙ্গী নির্বাচন

জ্ঞানপ্রেমিক ও রাস্ৰটবিজ্ঞানী এরিস্টটল (Aristotle) বলেন: ‘প্রকৃত বন্ধুত্ব হলাে দুই দেহ এক আত্মা’। এ বন্ধু নির্বাচনের ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। সংসারে ভালাের পাশাপাশি মন্দ লােকেরও অভাব নেই। সৎসঙ্গ ও অসৎসঙ্গ এই পার্থক্যের কথা বিবেচনা করেই মানুষের জীবনে সৎসঙ্গের প্রয়ােজনীয়তা স্বীকৃত হয়েছে এবং অসৎসঙ্গ পরিহারের চেষ্টা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। মানুষের শিশুকাল থেকে এ সম্পর্কে সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়। জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে যদি সঠিক গতিপথ নির্ধারণ করা যায় তবে ভবিষ্যৎ কখনও বিফল হতে পারে না। তাই ছােটবেলা থেকেই অসৎসঙ্গ পরিহার করে সৎসঙ্গ গ্রহণ করতে হবে। একজন উত্তম বন্ধু যেমন জীবনের গতি পাল্টে দিতে পারে, তেমনি একজন অসৎ বন্ধু জীবনকে পৌছে দিতে পারে ধ্বংসের চূড়ান্ত সীমায়। এ জন্যে প্রবাদ রয়েছে, ‘সঙ্গদোষে লােহা ভাসে’। পরশমণির ছোঁয়ায় লােহা যেমন সােনা হয়ে ওঠে তেমনি সৎ চরিত্রের প্রভাবে মানুষের পশুপ্রবৃত্তি ঘুচে যায়, জন্ম নেয় সৎ, সুন্দর ও মহৎ জীবনের আকাঙ্ক্ষা। আবার সঙ্গদোষে মানুষ তার চরিত্রকে হারিয়ে পশুর চেয়েও অধম হয়ে যায়।

এ জগতে যত লােকের অধঃপতন হয়েছে অসৎ সংসর্গই এর অন্যতম কারণ। মানুষ সতর্ক থাকলেও কুসংসর্গে পড়ে নিজের অজ্ঞাতে পাপের পথে পরিচালিত হয়। প্রবাদ রয়েছে ‘দৃর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য’। তাই সঙ্গ নির্বাচনে আমাদের সতর্ক হতে হবে। সৎসঙ্গ গ্রহণের ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক হতে হবে, কেননা অনেকে বন্ধু সেজে সর্বনাশ সাধন করে, এরকম হীন মনের মানুষও আমাদের সমাজে কম নয়। সে জন্য সৎসঙ্গ লাভের জন্য বন্ধু নির্বাচনের প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। যাদের বন্ধু বলে গ্রহণ করতে হবে তাদের আচার-আচরণ, কার্যকলাপ, তাদের প্রকৃতি ও প্রবৃত্তি সম্পর্কে আগেই ধারণা নিতে হবে। সৎসঙ্গ লাভের জন্য সমমনা হতে হবে। অর্থাৎ একজন সৎ লােকের জন্য অপর একজন সৎ লোকই প্রয়ােজন। মননে ও আদর্শে উভয়ের মধ্যে বিভেদ থাকলে চলবে না। যতটা পারা যায় একই মতাদর্শী ও একই আদর্শে উভয়কেই অনুপ্রাণিত হতে হবে।

ইসলাম এক্ষেত্রে উত্তম সঙ্গ বা বন্ধু নির্বাচণের পরামর্শ দিয়েছে : ‘মানুষ তার বন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠে। সুতরাং তার বন্ধু নির্বাচনে খেয়াল রাখতে হবে যে, সে কাকে বন্ধু বানাচ্ছে’। নিছক আবেগ ও ক্ষণিকের মােহে আবদ্ধ হয়ে বন্ধু নির্বাচন করলে এর পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে। এজন্য বন্ধু নির্বাচনের আগে তাকে পরীক্ষা করে নিতে হবে। বন্ধু নির্বাচনে তিনটি গুণ থাকা চাই :
১. তাকে হতে হবে জ্ঞানী,
২. চরিত্র হতে হবে সুন্দর ও মাধুর্যময়,
৩. হতে হবে নেককার, পূণ্যবান।
যাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তার বাহ্য ও অভ্যন্তরীণ দিক সম্পর্কে যথাসম্ভব খোঁজখবর নিতে হবে। জ্ঞানী, সৎ, ন্যায়পরায়ণ, ত্যাগী, নিঃস্বার্থ, চরিত্রবান, সহজ-সরল ইত্যাদি গুণ দেখে সঙ্গ নির্বাচন করলে উত্তম বন্ধু হতে পারে। গুণ-দোষ দেখে বন্ধুত্ব করার পর যদি তার কোনাে কুৎসিত চরিত্র প্রকাশ পায়, তবে তার থেকে দ্রুত নিজেকে সংবরণ করে নেয়া উচিত। 

সৎসঙ্গের প্রয়ােজনীয়তা

শেখ সাদীর (রহ.) বিখ্যাত উক্তি রয়েছে, “সৎসঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎসঙ্গে সর্বনাশ। সৎসঙ্গের প্রভাবে ব্যক্তির নির্মল চরিত্র নির্মল থাকে এবং তা আরও বিকশিত হবার সুযােগ পায়। মানুষ সামাজিক জীব। তাই সে একা বাস করতে পারে না। সমাজবদ্ধ জীবনযাপনের ক্ষেত্রে তাকে অন্যের সান্নিধ্য গ্রহণ করতে হয়, বন্ধু নির্বাচনের প্রয়ােজন পড়ে। কারণ বন্ধু জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার ভাগিদার। বন্ধুই পারে আত্মার মধ্যমণি হয়ে কিছুক্ষণের জন্য হলেও দুঃখকে ভুলিয়ে আনন্দের জগতে ডুবিয়ে রাখতে। একজন বিজ্ঞ বন্ধু জীবনের জন্য আশীর্বাদ। সৎসঙ্গের প্রভাবে অনেক কলুষিত চরিত্রের ব্যক্তিও অনুকরণ ও অনুসরণের পথ অবলম্বন করে নিজের চরিত্রকে নির্মল ও আকর্ষণীয় করে তােলার সুযােগ পায়। সৎসঙ্গের এই অনুবর্তনকারী এবং পরিবর্তনকারী উভয় প্রভাবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কাম্য। সুতরাং নিজের জীবন বিকশিত করার জন্য এবং একই সঙ্গে অপরের কলুষিত চরিত্রের ধ্বংসকারী প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য সৎসঙ্গ অত্যাবশ্যক।

কোনাে মানুষের জীবনই পরিপূর্ণতা নিয়ে বিকশিত হয়ে ওঠে নি, তাকে পরিপূর্ণতার দিকে অগ্রসর হতে হলে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত জীবন গঠনের জন্য শিক্ষাকাল চলতে থাকে ততদিন পর্যন্ত উত্তম সঙ্গী অপরিহার্য। এ ধরনের সঙ্গী জীবনের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা মানবজীবনের অসহায়তা দূর করে। কর্মপ্রেরণা দান করে জীবনকে উদ্দীপ্ত করে তােলে। সৎসঙ্গী কখনই বন্ধুর অকল্যাণ কামনা করে না, বরং সব সময় কীভাবে বন্ধুর উপকার হবে সে ব্যাপারে সচেতন থাকে। মন্দসঙ্গীর উদাহরণ কামারের মতাে। যদি কামারে আগুনে নাও পােড়ে তবে হাপরের ধোয়া অবশ্যই গায়ে লাগবে। আর ভালাে সঙ্গীর উদাহরণ হলাে আতর বিক্রেতার মতাে। তেমাকে যদি মিশক আতর নাও দেয়, তবুও তার সুগন্ধি অবশ্যই নাকে এসে পৌছে মনকে প্রফুল্ল করবে।

সুবন্ধু নিজের ক্ষতি স্বীকার করেও বন্ধুর উপকারে নিয়ােজিত হয়। ভালাে সঙ্গী সব সময় নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বন্ধুর স্বার্থকেই বড় করে দেখে। আমাদের দৈনন্দিন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অনেক সময়ই সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে জীবন থেকে পিছিয়ে পড়তে হয়, সেই ক্ষেত্রে একজন সৎ বন্ধুর প্রয়ােজনীয়তা দেখা দেয়। উত্তম বন্ধুর সৎ পরামর্শে জীবনে সফলকাম হয়েছে এমন দৃষ্টান্তের অভাব নেই। তাই আজীবন উত্তম সঙ্গীর প্রয়ােজন রয়েছে। একজন উত্তম সঙ্গী মানুষের জীবনকে করে তােলে মধুময়, আনন্দদায়ক ও সার্থক।

বর্তমান তরুণপ্রজন্ম ও সমাজব্যবস্থায় সৎ সঙ্গের প্রভাব

জীবনের প্রথম ধাপে বন্ধুর হাত ধরে একজন মানুষ পরিচিত হয় বাইরের জগৎ সম্পর্কে। এ সময় জানার সুযােগ হয় বিভিন্ন অজানা বিষয়ে। কৌতুহলবশত বন্ধুদের সঙ্গ দিতে গিয়ে তখন তরুণ প্রজন্ম জড়িয়ে যায় নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডে। বর্তমানে আমাদের সমাজে কিশাের অপরাধ বেড়ে যাওয়ার মূল কারণই হচ্ছে অসৎ বন্ধুদের সাহচর্য গ্রহণ। এজন্য ছেলে-মেয়েদের বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে মা-বাবার বিশেষ দৃষ্টি রাখা দরকার। নিজের ছেলে-মেয়ে কার সঙ্গে মিশছে সে খবর রাখতে হবে মা-বাবাকেই। অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করিয়ে সৎ সঙ্গ ধরিয়ে দেয়া তাদেরই কর্তব্য। বন্ধুত্ব জীবনে অপরিহার্য একটি বিষয়। এ ব্যাপারে আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হওয়া দরকার। বর্তমানে ক্ষয়িষ্ণু এই সমাজব্যবস্থাকে পরিশুদ্ধ করার ক্ষেত্রে সঙ্গ নির্বাচনে সতর্ক হওয়ার কোনাে বিকল্প নেই। একজন মুসলমান হিসেবে পার্থিব ও পারলৌকিক সফলতার জন্য বন্ধুত্ব গ্রহণের বিষয়টি আরাে বেশি গুরুত্ব রাখে। এ কথা নিঃসকোচে বলা যায়।

উপসংহার

জীবনে সুখী হতে হলে এবং নিজের প্রতিভা ও ব্যক্তিত্বকে বিকশিত করে তুলতে হলে সৎসঙ্গের কোনাে বিকল্প নেই। একথা মনে রাখা দরকার সৎসঙ্গ যদি নাও মেলে, তাহলে নিঃসঙ্গ থাকা ভালাে। আর যদি নিতান্ত প্রয়ােজনে অসৎ ব্যক্তির সঙ্গে মিশতেই হয়, তাহলে এ-কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, “তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম না হইব কেন।”

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

ভাবসম্প্রসারণ

যে সহে সে রহে | ভাবসম্প্রসারণ SSC HSC JSC

3.2/5 - (12 votes)

যে সহে সে রহে

ভাবসম্প্রসারণ যে সহে সে রহে ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ শ্রেণী SSC HSC JSC

মূলভাব

মানবজীবনে সফলতা লাভের জন্য ধৈর্য ও সহনশীলতা অত্যাবশ্যক। যারা সকল ক্ষেত্রে ধৈর্য ধারণ করে, তারাই সফলতা লাভ করে। 

সম্প্রসারিত ভাব

মানুষের জীবন সংগ্রামময়। জন্মের পর থেকেই মানুষকে শীত-তাপ , রােগশােক, দুঃখ-দারিদ্র্যের সাথে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। আর এসবের জন্য প্রয়ােজন হয় ধৈর্য বা সহনশীল। এখানে ধৈর্য বলতে কোনাে কাজে তড়িৎ সিদ্ধান্ত না নিয়ে ধীরে-সুস্থে অগ্রসর হওয়া এবং লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য বারবার চেষ্টা চালানােকে বুঝানাে হয়েছে। যারা ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা সহকারে একাগ্রচিত্তে কাজ করে যায়, তাদের সফলতা নিশ্চিত। পক্ষান্তরে, যারা কাজে যােগ দিয়েই এর ফল প্রাপ্তির জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে, সামান্যতেই বিরক্ত হয়ে সিদ্ধান্ত পলটায়, তাদের পক্ষে কোনােদিনই সফলতা লাভ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। 

মহামানবদের জীবনী পর্যালােচনা করলে দেখা যায়, তাদের জীবন ধৈর্য বা সহনশীলতায় পরিপূর্ণ। তারা মানুষের ভালাে বৈশিষ্ট্যগুলােকে গ্রহণ এবং মন্দগুলােকে বর্জন করেছেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) তায়েফে শত্রুদের পাথরের আঘাতে রক্তাক্ত হওয়ার পরও তাদেরকে অভিশাপ না দিয়ে ক্ষমা করে দিয়েছেন। এমনকি তাদেরকে হেদায়েত দানের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে সুপারিশ করেছেন। জাগতিক নিয়মানুসারে জীবনব্যাপী কারাে সুখ থাকে না, মাঝে মাঝে দুঃখও আসে। 

দুঃখ বা বিপদের সময় অধৈর্য না হয়ে ধৈর্যধারণ করতে হয়। ধৈর্যধারণ করতে পারলে একসময় দুঃখকষ্ট কেটে গিয়ে জীবন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরে ওঠবে এতে কোনাে সন্দেহ নেই। স্কটল্যান্ডের রাজা রবার্ট ব্রুস ধৈর্য ও সহনশীলতার মূর্তপ্রতীক। শত্রুদের কাছে প্রিয় দেশের শাসনক্ষমতা হারিয়ে তা পুনরুদ্ধারে বারবার ব্যর্থ হয়েও ধৈর্য হারাননি। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার গুণেই তিনি প্রিয় দেশের শাসনক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে পেরেছিলেন। তাই বলা হয়, যে সহে, সে রহে। 

মন্তব্য

সহনশীলতা সফলতা লাভের পূর্বশর্ত। সহনশীলতা ছাড়া জীবনে কেউ কোনােদিন প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে না।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

One Comment

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button