হরতাল
বিষয়ঃ অনুচ্ছেদ
শ্রেণিঃ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১
গুজরাটি শব্দ ‘হরতাল’ বা ধর্মঘট বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অবিচ্ছেদ্য বিষয়। ইংরেজি ‘Strike’ শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ ধর্মঘট। মূলত গােষ্ঠী বিশেষের ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘিত হলে ঐ ক্ষুব্ধ গােষ্ঠীর ডাকে কাজকর্ম বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানানাের নামই হরতাল। বাংলাদেশে হরতাল শব্দটি আরও ব্যাপক অর্থ পেয়ে রাজনৈতিক দলের বৃহত্তর কর্মসূচির সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে গেছে। হরতালের কার্যকারিতা প্রমাণিত হয় বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলন চলার সময়। ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনেও হরতাল গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষের আন্দোলনের অন্যতম দিক ছিল এই হরতাল।
হরতাল যদি যৌক্তিক জনস্বার্থে আহ্বান করা হয় তাহলে জনগণ তাতে সাড়া দিয়ে কাজকর্মে বিরতি দিয়ে ঘরে বসে থাকে। শিল্পকারখানায় উৎপাদন হয় না। সর্বাত্মক হরতালে জনমত সম্পর্কে ধারণা লাভ করে ক্ষমতাসীন দল বা গােষ্ঠী এবং কর্তৃপক্ষ বিচলিত হয়ে পড়ে। জনগণের সমর্থন থাকায় হরতালকারীদের দাবি মেনে নিতে তখন তারা বাধ্য হয়। ১৮৮৬ সালের ১ মে শিকাগাের কৃষিযন্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানির শ্রমিকেরা দৈনিক আট ঘণ্টা কর্মকাল দাবি আদায়ের জন্য ধর্মঘট ডেকেছিল। তারা কাজ বাদ দিয়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল সেদিন। গণতন্ত্রের নামে এবং জনস্বার্থে হরতাল আহত হলেও হরতালকারীরা এর কোনােটিকেই তােয়াক্কা করে না। হরতাল কর্মসূচি ঘােষণা করার পর এর পক্ষে যে মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় তা থেকেই গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযােগ ইত্যাদি ঘটনা ঘটে।
হরতাল চলাকালে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ সময় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিপর্যয় নেমে আসে। বর্তমানে হরতালকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলাে নানাভাবে অপব্যবহার করছে। হরতাল বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলােকে হরতাল আহ্বানের ব্যাপারে আরও সচেতন ও দায়িত্বশীলতার প্রমাণ দিতে হবে।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Nice