অনুচ্ছেদ

অনুচ্ছেদঃ শিশুশ্রম

3/5 - (2 votes)

শিশুশ্রম

বিষয়ঃ অনুচ্ছেদ
শ্রেণিঃ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১

আজকের শিশুরাই আগামীর কর্ণধার। কিন্তু শিশুরা বর্তমানে নানা ধরনের নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। শিশুশ্রম একটি ভয়ংকর সামাজিক ব্যাধি। একটি দেশের আগামী প্রজন্মের ধ্বংস করে দেয় এই শিশুশ্রম। দেশের উন্নয়নের হাতিয়ার যাদের মধ্যে রয়েছে তারা অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়ে যায়। আর্থসামাজিক বৈষম্য, সম্পদের অসম বণ্টন, নৈতিক মূল্যবােধের অবক্ষয়ের কারণে ফুলের মতাে কোমল নিস্পাপ শিশুদের কচি কচি হাতগুলাে শ্রমের হাতিয়ার হয়ে উঠতে বাধ্য হয়। ফলে তাদের সুপ্ত মানসিক বিকাশ শুরু না হতেই শেষ হয়ে যায়। ছােটখাটো কলকারখানা থেকে শুরু করে পাথর ভাঙা, ফেরি করা, ভিক্ষাবৃত্তি করা, বাসা-বাড়িতে কাজ করা, গার্মেন্টস, গ্যারেজ, দোকানপাট, হােটেল-রেস্টুরেন্ট এমনকি মাদকদ্রব্য পাচার ইত্যাদি ক্ষেত্রে শিশুদের শ্রমিক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য যেসব কাজ ঝুঁকিপূর্ণ সেসব কাজে অবলীলায় শিশুদের নিয়ােগ করা হয়। 
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) (International Labour Organization) এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) (UNICEF) আঠারাে বছর বয়স পর্যন্ত মানুষকে যেকোনাে ধরনের শারীরিক ও মানসিক শ্রমে নিয়ােগকে শিশুশ্রম বলে উল্লেখ করে তা নিষিদ্ধ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষর করে জাতীয় শিশুনীতি ঘােষণা করলেও এখনাে এদেশে শিশুশ্রম ব্যাপকভাবে প্রচলিত। করণ শিশুদের অপরিণত দেহ ও কচি মন শ্রমদানে নিষ্পেষিত হতে থাকে এবং দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্লান্তির ভারে এরা অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। তাই এই অমানবিক কাজ বন্ধের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক প্রণীত শিশু ও নারী নির্যাতন আইন, প্রয়ােগে আরও কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। শিশুশ্রম রােধকল্পে আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে এবং শিশুশ্রম ও নির্যাতন রােধে নতুন আইন প্রণয়ন ও সেই আইনের সুবিধা যাতে শ্রমপীড়িত শিশুরা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

আজকের শিশুই আগামী দিনের দেশ ও জাতির কর্ণধার। তাদের ওপরে নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ শান্তি ও তাদের সুন্দর ও সুস্থ একটি ভবিষ্যতের জন্য জনসচেতনতা তৈরি করা। তা করতে পারলেই দেশ ও জাতি তাদের দ্বারা উপকৃত হবে।

বিকল্পভাবে লিখা যায়
আমাদের দেশে অশিক্ষা ও দারিদ্র্যের কারণে অধিকাংশ শিশুরই উপযুক্ত কোন পরিচর্যা করা হয় না। বরং জীবনের শুরুতে তাদের জীবিকার তাড়নায় নিয়োজিত হতে হয় ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে। শিশুশ্রম তাই এদেশে খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। শিশুশ্রমের ক্ষেত্র আমাদের দেশে বেশ প্রসারিত। বাসা বাড়ির কাজ, হোটেলে ধোয়ামোছার কাজ, গ্যারেজের গাড়ি মেরামত, গ্যাস ওয়েল্ডিং এর মত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, নালা নর্দমা পরিষ্কারের কাজ, ইট ভাঙ্গা, পাথর ভাঙ্গা থেকে শুরু করে এমন কোন কাজ নেই যা শিশুদের দ্বারা করানো হয় না। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই শিশু অধিকার একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত। জাতিসংঘ সনদে শিশু অধিকার সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ও এই সনদে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। তাই এদেশের শিশুদের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। শিশু অধিকারের আওতায় ১৮ বছরের নিচের বয়সী সকলকে শিশু হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। শিশু অধিকার আইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে :ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, অর্থনৈতিকভাবে শোষণ শিশুদের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়। শিশুশ্রম বন্ধে এখনই বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার আগে দেখা প্রয়োজন শিশুরা কেন শ্রম দিতে বাধ্য হয়। এর কারণগুলো চিহ্নিত করে বাস্তবমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুশ্রম হ্রাস করতে হবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ। সে হিসেবে সরকারের যেমন যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে, তেমনি জনগণকেও শিশুশ্রমের ভবিষ্যৎ পরিণতি ও ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবগত করতে হবে। তবেই বাংলাদেশে শিশুশ্রম প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button