ভাবসম্প্রসারণ

ভাবসম্প্রসারণঃ আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে

Rate this post
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে
সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে
অথবা
আপনা রাখিলে ব্যর্থ জীবন সাধনা/ জনম বিশ্বের তরে পরার্থে কামনা।
অথবা
আত্মসুখ অন্বেষণে আনন্দ নাহিরে । বারে বারে আসে অবসাদ, পরার্থে যে করে কর্ম তিতি ঘর্ম-নীরে । সেই লভে স্বর্গের প্রসাদ।
শ্রেণিঃ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ ১১ SSC HSC JSC
পরার্থে জীবন উৎসর্গ করার মাধ্যমে মানবজীবন সার্থকতায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সমাজের কল্যাণে নিজেদের নিঃশেষে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যে আছে পরম সুখ, অনির্বচনীয় আনন্দ ও অপরিসীম পরিতৃপ্তি।

অন্যের উপকার সাধনই তাই সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত। মানুষ একে অপরের ওপর নির্ভরশীল বলে তাকে সমাজবদ্ধভাবে বাস করতে হয়। এজন্য পরস্পর প্রীতি ও ভালােবাসা, নির্ভরতা ও সহযােগিতার পরিবেশ মানুষ নিজের প্রয়ােজনেই সৃষ্টির গােড়া থেকে গড়ে তুলেছে। শুধু পরিবার বা সমাজ নয়, রাষ্ট্র নয়, সমগ্র পৃথিবী ও রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং জাতিগােষ্ঠী পরস্পর সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য, নির্ভরতা ও সহযােগিতার মধ্যে বাস করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। কারণ একজন মানুষ যেমন সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে বাস করতে পারে না, তেমনি পৃথিবীর বৃহৎ মানবগােষ্ঠীও পরস্পর নির্ভরশীলতা ছাড়া বাস করতে পারছে না। এমন একটি বৈশ্বিক সমাজে আমরা নিজেদের নিয়ে আত্মকেন্দ্রিকভাবে, শুধু নিজের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে বাস করতে পারব না। প্রকৃতপক্ষে, মানুষ শুধু ভােগ-বিলাস ও স্বার্থের জন্যেই জন্মগ্রহণ করে নি। পরের কল্যাণে জীবনকে উৎসর্গ করার মাঝেই তার জীবনের চরম ও পরম সার্থকতা।

পরের কল্যাণ সাধনই মহত্তের লক্ষণ। অপরের কল্যাণে নিজকে নিয়ােজিত করতে পারলেই জীবন সুখময় ও আনন্দময় হয়ে ওঠে। জগতের সাধু ও মহৎ ব্যক্তিগণও তাই করেন। তারা সর্বদা পরের হিত সাধনে ব্যাপৃত থাকেন এবং পরের তরে জীবন বিসর্জন দিতেও কুণ্ঠাবােধ করেন না। কেননা ব্যক্তিস্বার্থ পরিহারের মাধ্যমেই সমাজ সুন্দর ও সার্থক হয়ে ওঠে। মহৎ ব্যক্তিগণ বিশ্বমানবের। তারা সকলের প্রিয় এবং সকলের আপনজন। তাদের জীবন পুষ্পের ন্যায় পরার্থে উৎসর্গীকৃত। মানুষকে ব্যক্তিস্বার্থের কথা না ভেবে সবার স্বার্থের কথা ভাবতে হবে। হৃদয়কে ফুলের মতাে বিকশিত করতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থের জন্যে মানুষ যা করে তা নিরর্থক, নিষ্ফল। মহাকালের চিরন্তন স্রোতে তা বিলীন হয়ে যায়। মানুষ সমস্ত জীবন ধরে ফসল চাষ করে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি দেশ ও দশের কল্যাণে নিজেকে নিয়ােজিত করে মৃত্যুর পরও তার সৃষ্ট সােনার ফসল টিকে থাকে। তাই সবার স্বার্থে আত্মনিয়ােগ করতে পারলে জীবন হয় সার্থক ও সফল।

যারা সত্যিকারের মানুষ তাঁরা নিজের স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দুতে নিজেকে আচ্ছন্ন করে রাখে না। যেসব আবিষ্কার ও মহৎ কর্ম আজ বিশ্বকে সভ্যতার চরম শিখরে উপনীত করেছে তার মূলে রয়েছে মানুষের অবদান। কিন্তু তা ব্যক্তিগতভাবে কুক্ষিগত করে রাখা হয় নি, বরং মানুষের জন্যে, দেশ ও দশের জন্যে তা উৎসর্গ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে মহৎ কর্মের জন্যে সে অমরত্ব লাভ করে মানুষের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। আমরা শুধু নিজের জন্যই জন্মগ্রহণ করিনি, নিজের সুখই আমাদের একমাত্র কাম্য হতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে পরের কল্যাণকামনা, অন্যের সুখ-দুঃখ-আনন্দ-বেদনা ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই সুখ। এ সুখই আমাদের প্রার্থিত হওয়া উচিত।


 এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন। 

Google News

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

5 Comments

  1. 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি' ভাবসম্প্রসারনটি কোথায় পাব?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button