বাংলা রচনা

রচনা : চিকিত্সাশাস্ত্রে বিজ্ঞানের অবদান (Chikitsa Khetre Bigganer Obodan)

4.4/5 - (10 votes)

চিকিত্সাশাস্ত্রে বিজ্ঞানের অবদান অথবা চিকিত্সাক্ষেত্রে বিজ্ঞান (Chikitsa Khetre Bigganer Obodan Rochona) for class JSC SSC HSC, Rochona PDF

ভুমিকা

আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞানের অবদানের উপর ভর করে আধুনিক সভ্যতা গড়ে উঠেছে । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে বর্তমান বিশ্বে জীবন যাপনের কথা কল্পনাও করা যায় না। মানবসভ্যতা সমৃদ্ধকরণে বিজ্ঞানের যতগুলো শাখা রয়েছে, তার মধ্যে চিকিৎসা বিজ্ঞান অন্যতম। চিকিৎসা বিজ্ঞান আজ এক নতুন আশীর্বাদ হিসেবে মানুষের জীবনে আবির্ভূত হয়েছে। এক সময়ে যেসব দুরারােগ্য ব্যাধি থেকে মানুষের মুক্তির কোনাে উপায় ছিল না, বিজ্ঞান বর্তমানে সেসব ব্যাধি থেকে মুক্তির উপায় উদ্ভাবন করেছে।

প্রাচীন চিকিত্সা ব্যবস্থা

প্রাচীনকালে রােগ নির্ণয়ের জন্য তেমন কোনাে ব্যবস্থা ছিল না। চিকিৎসাক্ষেত্রে তাই অনুসরণ করা হতাে প্রথাগত পদ্ধতি। সে সময়ে মানুষ বিভিন্ন গাছ-গাছড়া, দোয়া তাবিজ-কবচ, পানিপড়া এবং ঝাড়ফুঁকের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তখন মানুষের জীবনও ছিল খুব সংকটাপন্ন। উন্নত চিকিত্সা ব্যবস্থা না থাকায়  তখন মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী অজানা জটিল সব রোগে আক্রান্ত হতো। বিভিন্ন রােগে আক্রান্ত হয়ে তখন মানুষ মারা যেত অসহায়ভাবে। কোনাে কোনাে রােগ মহামারীতে রূপ নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম মানুষ মারা যেত। মানুষ তখন মারা যেত সঠিক চিকিৎসার অভাবে।

আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সূচনা

আধুনিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসাক্ষেত্রে মানুষের ধ্যান-ধারণায় পরিবর্তন এসেছে। প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা উদ্ভাবনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের বদৌলতে প্রাচীন পদ্ধতির কবিরাজি চিকিৎসার স্থলে হােমিওপ্যাথিক ও অ্যালােপ্যাথিক চিকিৎসার উদ্ভব হয়েছে। পেনিসিলিন, ক্লোরােমাইসিন, স্ট্রেপটোমাইসিন ইত্যাদি ওষুধ আবিষ্কারের ফলে মানুষ গাছ-গাছড়া, তাবিজ-কবচ ও ঝাড়ফুঁকের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে দিয়ে আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। আগে কুকুর বা শিয়ালের কামড়ে জলাতঙ্ক রোগের সৃষ্টি হতো এবং পরিণামে মানুষ মারা যেতো। বর্তমানে জলাতঙ্ক, হাম , বসন্ত ইত্যাদি রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব চিকিৎসাব্যবস্থা আধুনিক বিজ্ঞানেরই বিস্ময়কর অবদান।

বিশ শতক ও চিকিৎসাবিজ্ঞান

বর্তমান চিকিৎসাশাস্ত্র পুরােপুরি বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল। বিংশ শতাব্দীতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। ১৯০৩ সালে আবিষ্কৃত হয় জিনের গঠন প্রণালি, ইসিজি মেশিন এবং মরণব্যাধি ক্যান্সার চিকিৎসার রেডিওথেরাপি, ১৯২৮ সালে আবিষ্কৃত হয় পেনিসিলিন। ১৯৪৩ সালে আবিষ্কৃত হয় কিডনি ডায়ালাইসিস মেশিন, ১৯৭৮ সালে আবিষ্কৃত হয় টেস্টটিউব প্রজনন পদ্ধতি এবং ১৯৯৭ সালে আবিষ্কৃত হয় ক্লোন পদ্ধতি। বিজ্ঞানের এসব আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসাক্ষেত্রে এসেছে অভাবনীয় উন্নতি।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার

বিজ্ঞান মানুষদের মৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা করে তাদের আয়ু বাড়িয়ে দিয়েছে। রঞ্জন রশ্মি (X-Ray), রেডিয়াম-এর আবিষ্কার চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটিয়েছে। রঞ্জন রশ্মি ও আলট্রাসনােগ্রাফির সহায়তায় শরীরের অদৃশ্য অংশের ক্ষত নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে। রেডিয়াম ক্যানসারের মতাে ভয়ংকর ক্ষতের মারাত্মক বিষক্রিয়াকে অনেকাংশে প্রশমিত করছে। দুরারােগ্য সংক্রামক ব্যাধি বসন্তের জীবাণু ধ্বংসের জন্য ডা. জেনর ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করে বসন্ত রােগকে নির্মূল করেছেন। পােলিও রােগের বিকলাঙ্গতা থেকে মানুষকে আজ রক্ষা করছে চিকিৎসাবিজ্ঞান।

রোগ নির্ণয়ে বিজ্ঞান

রােগ নিরাময়ের প্রথম শর্ত হচ্ছে সঠিকভাবে রােগ নির্ণয় করা। সঠিকভাবে যদি রােগ নির্ণয় করা যায় তাহলে সে অনুযায়ী চিকিৎসারও ব্যবস্থা করা যায়। প্রাচীনকালে মানুষের রােগব্যাধি হলে তা নির্ণয়ের সঠিক ব্যবস্থা ছিল না। চিকিৎসকরা তখন নিজেদের মনগড়া অভিজ্ঞতার সাহায্যে ওষুধপথ্য নির্ধারণ করতেন। ফলে অনেক সময় সঠিক চিকিৎসা সম্ভব হয়ে উঠত না। বর্তমানে চিকিৎসাক্ষেত্রে রােগ নির্ণয়ে বিশেষ সূচনা রাখছে বিজ্ঞান। বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক সহজতর হয়েছে। অধ্যাপক রন্টজেন রঞ্জন রশ্মি বা ‘এক্স-রে’, আলট্রাসনােগ্রাফি, অধ্যাপক কুরি ও মাদাম কুরির আবিষ্কৃত , ‘রেডিয়াম’ চিকিৎসাক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। রঞ্জন রশ্মির সাহায্যে শরীরের অদৃশ্য বস্তু দেখার ব্যবস্থা রয়েছে এবং রেডিয়ামের সাহায্যে ক্যান্সারের মতাে ভয়ঙ্কর ক্ষতের মারাত্মক বিষক্রিয়া প্রতিহত করা অনেকাংশে সম্ভব হয়েছে। এক্স-রে মেশিন না হলে রােগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি হতাে এবং এর ফলে সুচিকিৎসা কোনাে দিনই সম্ভব হতাে না। তা ছাড়া রােগীর রক্ত, মলমূত্র ইত্যাদি উপাদান পরীক্ষার জন্য আধুনিক যেসব পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে, তাও বিজ্ঞানেরই অবদান। বর্তমানে কম্পিউটারের মাধ্যমেও রােগ নির্ণয়ের সুন্দর ব্যবস্থা আবিষ্কৃত হয়েছে। ফলে চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

রোগ প্রতিরোধে বিজ্ঞান

রােগ নিরাময়ের চেয়ে রােগ যাতে সৃষ্টি না হতে পারে তার জন্য প্রতিরােধ ব্যবস্থা গ্রহণ সবচেয়ে বেশি জরুরি। রােগে আক্রান্ত হওয়ার আগে রােগ প্রতিরােধ করতে পারলে অতিরিক্ত ভােগান্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এমন কিছু রােগব্যাধি আছে, যা প্রতিরােধের জন্য বিজ্ঞান আগেই ব্যবস্থা নির্দেশ করেছে। যেমন- শিশুর জন্মের পর বিভিন্ন মেয়াদে ডি.পি.টি, পােলিও, হাম, গুটি বসন্ত, হেপাটাইটিস, যক্ষ্মা, টাইফয়েড ও মাস ইত্যাদির টিকা দেয়া হচ্ছে। ফলে অনেক রােগ দেহে সৃষ্টি হওয়ার আগেই প্রতিরােধ করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে অগণিত শিশু।

রােগ নিরাময়ে বিজ্ঞান

রােগ নির্ণয় এবং রােগ প্রতিরােধের ব্যবস্থাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় অবদান। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানের বড় সাফল্য হলাে বিভিন্ন রােগ নিরাময়ের জন্য নানা রকম ওষুধপত্রের আবিষ্কার। একসময় দুরারােগ্য ব্যাধির চিকিৎসার কোনাে ব্যবস্থাই ছিল না। বিজ্ঞান সেসব রােগ নিরাময়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। যেমন- যক্ষ্মার ব্যাপারে একটি প্রবাদবাক্য প্রচলিত ছিল যে, যার হয় যক্ষ্মা তার নেই রক্ষা। বিজ্ঞান এ মারাত্মক ব্যাধিকেও জয় করেছে ওষুধ আবিষ্কারের মাধ্যমে। এখন আর যক্ষ্মা কোনাে দুরারােগ্য ব্যাধি নয়। তাছাড়া ভয়ঙ্কর জলাতঙ্ক ও কুষ্ঠরােগ ইত্যাদি নিরাময়ের জন্যও বিজ্ঞান কার্যকর ওষুধ ও ইনজেকশন আবিষ্কার করেছে। বর্তমান বিশ্বে। যে দুটি রােগ সবচেয়ে দুরারােগ্য বলে গণ্য হচ্ছে তা হলাে ক্যান্সার ও এইডস। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এটি ক্যান্সার নির্ণয় ছাড়াও এর প্রতিষেধক আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মরণব্যাধি এইডস প্রতিরােধের ব্যবস্থাসহ এর প্রতিষেধক আবিষ্কারেও চিকিৎসাবিজ্ঞান সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে। এককালের মহামারী বসন্ত রােগ থেকে মুক্তির জন্য আবিষ্কৃত হয়েছে ভ্যাক্সিন।

জটিল রোগের চিকিৎসায় বিজ্ঞান

বর্তমানে জিন প্রতিস্থাপন চিকিৎসা প্রায়ােগিক ক্ষেত্রে এক বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। কর্নিয়া, বৃক্ক, অস্থিমজ্জা, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস এবং যকৃতের মতাে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনে চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক সাফল্য অভাবনীয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে ফাইবার অপটিকস ব্যবহারের ফলে মানবদেহের অভ্যন্তরস্থ ফুসফুস, পাকস্থলী, বৃহদন্ত্র, ক্ষুদ্রান্ত্র, উদর, অস্থিগ্রন্থি, শিরা, ধমনি ইত্যাদির অবস্থা যন্ত্রের সাহায্যে দেখে নির্ভুলভাবে রােগ নির্ণয় করা যায়। বর্তমানে কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড তৈরি করা হচ্ছে এবং রােগীর দেহে সংযােজন করে তাকে দীর্ঘদিন কর্মক্ষম রাখার কৃতিত্বপূর্ণ দৃষ্টান্তও বিজ্ঞানেরই সৃষ্টি।

অতি সম্প্রতি চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা কৃত্রিম ফুসফুস তৈরিতেও সফল হয়েছেন। শুধু তাই নয়, অপটিক ফাইবার সংবলিত বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্যে ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা যায়, অনাকাক্ষিত বস্তুসামগ্রী ও ছােট ছােট টিউমার অপসারণ করা যায়, রক্তবাহী নালিকা মেরামত করা যায়, অতিকম্পনশীল শব্দ ও লেজারকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞান চিকিৎসাক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে। ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের অবস্থা দেখা যেমন সম্ভব হচ্ছে, তেমনি মূত্রথলি ও পিত্তথলির পাথর চূর্ণ করার কাজেও এর সফল প্রয়ােগ হচ্ছে। ডায়বেটিস রােগীর অন্ধত্ব প্রতিরােধে ব্যবহৃত হচ্ছে লেজার রশ্মি। এ রশ্মির সাহায্যে কোষকলা ছেদন ও রক্তবাহী নালির ভেতরে জমে ওঠা পলি অপসারণও করা হচ্ছে। প্লাস্টিক সার্জারির সাহায্যে আজকাল অসুন্দর ও অমসৃণ চেহারাকে সুন্দর ও মসৃণ করা হয়। তারুণ্যকে কীভাবে বেশিদিন ধরে রাখা যায়, সে বিষয়েও বিজ্ঞান নিরন্তর গবেষণা অব্যাহত রেখেছে। আশা করা যায়, অদূর ভবিষ্যতে জটিল সমস্ত রােগব্যাধি নিরাময়ের ব্যবস্থাই বিজ্ঞান নিশ্চিত করতে পারবে।

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞানের গুরুত্ব

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ সূচনা পালন করে চলেছে। অনেক গােপনীয় ও দুরারােগ্য রােগ নির্ণয় ও এর চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান যদি চিকিৎসা ব্যবস্থায় অসাধ্য সাধনে সক্ষম না হতাে তাহলে কঠিন সব রােগ-ব্যাধির কারণে অনেক মানুষ অকালে ঝড়ে পড়তাে। বিজ্ঞান মানুষকে আশার আলাে দেখিয়েছে। মানুষের জীবনকে সুখ-শান্তিতে ভরে দিয়েছে এ বিজ্ঞান। সুতরাং বর্তমান বিশ্ব এই বিজ্ঞানের কাছে অনেক অংশেই ঋণী

উপসংহার

বিজ্ঞান বিশ্বসভ্যতার জন্য একাধারে আশীর্বাদ ও অভিশাপ দুটোই। তবে চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান কেবল আশীর্বাদই নিয়ে এসেছে। প্রবাদ আছে যে, সুস্থ শরীরে সুস্থ মন বিরাজ করে। মানুষের এ সুস্থ শরীরের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য বিজ্ঞান নিঃসন্দেহে মুখ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিশ্বখ্যাত মনীষী কিপলিংয়ের মতে, বিজ্ঞানের আশীর্বাদে বিশ্বমানবতা কখনাে উল্লসিত হয় আবার কখনাে তার বিভীষিকাময় রূপে বিশ্বসভ্যতা থমকে দাঁড়ায়, কিন্তু চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান এনেছে শুধু আশীর্বাদ আর আশীর্বাদ। বিজ্ঞানের অপরিসীম অবদানে জটিল রােগে আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে বাঁচার আশা জাগিয়ে তুলেছে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। আমাদের সকলের উচিত বিজ্ঞানের নবতর অগ্রযাত্রায় সহায়তা করা।

Rimon

This is RIMON Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button