ভাবসম্প্রসারণ – দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর।
মূলভাব
প্রাকৃতিক পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত ও প্রশান্তিদায়ক। আধুনিক সভ্যতার কর্মনাশা স্রোতে আজ আরণ্যিক পরিবেশ ধ্বংসের মুখে। শহুরে সভ্যতা আর কৃত্রিমতায় মানবজীবন অতিষ্ঠ। মানুষ আজ আরণ্যিক জীবন ফিরে পেতে চায়।
সম্প্রসারিত ভাব
সভ্যতার অগ্রগতির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানের যে নাগরিক সভ্যতার বিচিত্র বিকাশ ঘটে চলেছে, তাতে মানুষের জীবনে নানা সংকট এসে ভিড় জমাচ্ছে। জীবন হয়ে ওঠেছে দুর্বিষহ। কবির ভাষায়, অতীতে আমাদের দেশটি ছিল ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড়, ছােটো ছােটো গ্রামে ভরা। সেখানে তপােবনকে কেন্দ্র করে প্রকৃতির মধ্যে অনাবিল আনন্দের যে বিকাশ ঘটেছিল, তা নিয়ে মানুষ সুখী ছিল। মানুষ-মানুষের প্রতি প্রীতি-সেহে ও মায়া-মমতায় পরিপূর্ণ ছিল। তখন গ্রামের নির্মল বাতাস মানুষকে শারীরিকভাবে সুস্থ ও সজীব রাখতাে। নগর সভ্যতা গড়তে গিয়ে মানুষ বনভূমিকে নির্বিচারে ধ্বংস করে তার ওপর ইট-কাঠ-পাথরের কৃত্রিম শােভা স্থাপন করে মূলত প্রকৃতির অপরূপ রূপের তথা মানবজাতির কবর রচনা করে চলেছে।
অবিরাম বৃক্ষ নিধন একদিন মানুষের অস্তিত্বই বিপন্ন করবে, দেশকে প্রাকৃতিক ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার ক্ষেত্রেও বনভূমির ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু অরণ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষ অবগত থাকলেও তেমন সচেতন নয়। মানুষ বর্তমানে অরণ্য সৃজনের মাধ্যমে পৃথিবীতে জীবনের প্রতিশ্রুতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারে। স্নিগ্ধ শীতল ছায়া এবং প্রাণের উৎস অম্লজান থেকে শুরু করে খাদ্য, শ্যামল-স্নিগ্ধ স্নেহময়ী জননীর মূর্তি দান করতে। অরণ্যই পারে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে। সবুজ-শ্যামল আদিপ্রাণ অরণ্য আজও মানুষকে কাছে ডাকে। আধুনিক নগরজীবন তথা বিজ্ঞানভিত্তিক সভ্যতা মানুষকে শান্তি দিতে পারে না। তাই মানুষ আজ অশান্ত জীবন থেকে অব্যাহতি লাভের আশায় অতীতের সেই সুখকর জীবনকেই কাছে পেতে চায়।
মন্তব্য
আধুনিক পৃথিবী অরণ্যহীন ইট-পাথরের সভ্যতায় যে বিচিত্র সমস্যা মানুষ মােকাবিলা করে চলেছে; এর তুলনায় অতীতের অরণ্যশােভিত জনপদ অনেক বেশি সুখকর ও আনন্দময় ছিল। তাই অতীতের অরণ্যশােভিত সৌন্দর্যই মানুষের কাম্য।
#ভাবসম্প্রসারণ #বাংলা ২য় # HSC # SSC
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
