ভাবসম্প্রসারণ
ভাবসম্প্রসারণ “দণ্ডিতের সাথে দণ্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার” – বাংলা ২য়
ভাবসম্প্রসারণ (বাংলা ২য় )
দণ্ডিতের সাথে দণ্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার।
মূলভাব
অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে- এ কথা গূঢ় সত্য। বিচারক অপরাধীকে শাস্তি বিধানকালে শাস্তি ভােগকারীর বেদনা যখন বিচারকের মনেও রেখাপাত করে, সে বিচারই হয় সফল বিচার।
সম্প্রসারিত ভাব
অপরাধী সাজা পাবে এটি স্বাভাবিক ব্যাপার এবং জগতের একটা সাধারণ নিয়মও বটে। অপরাধীকে যদি শাস্তি দেওয়া না হয় তাহলে অপরাধের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে এবং একসময় সমাজ মনুষ্য বসবাসের অনুপযােগী হয়ে পড়বে। তাই অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার কোনাে বিকল্প নেই। বিচারক সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে অপরাধের গুরুত্ব অনুসারে লঘু, মাঝারি কিংবা গুরুদণ্ড দিয়ে থাকেন। প্রকৃত বিচার বা শাস্তি বিধানের ক্ষেত্রে বিচারকের ব্যক্তিগত ক্রোধ বা ঈর্ষার কোনাে স্থান নেই। কেননা রায় প্রদানের ক্ষেত্রে বিচারকের ব্যক্তিগত পছন্দ, অপছন্দ, হিংসা-বিদ্বেষ কিংবা রাগ-অনুরাগ বিচারের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করে। নিরপেক্ষ বিচারক তাই অপরাধীর বিচারকালে এগুলােকে সামান্যতম প্রশ্রয় দেন না। যদি কেউ দেন, তাহলে তার বিচার নিরপেক্ষ হবে না হতে পারে না।
প্রকৃতই যিনি নিরপেক্ষ বিচারক, তাকে মানবতাবােধসম্পন্ন হতে হয়। যিনি মানবিক বিচারক, তিনি অপরাধের মাত্রা শুনে কখনই ক্ষুব্ধ হবেন না, বরং অপরাধীর অধঃপতনের মাত্রা অনুসারে তার জন্য কমবেশি ব্যথিত হবেন। ন্যায়ের খাতিরে অপরাধীকে শাস্তি দিতে বাধ্য হলেও দণ্ডিতের কষ্টের কথা ভেবে দুঃখিত হবেন। অপরাধীর প্রতি দরদে তার হৃদয় কেঁদে হয়ে উঠবে। বিচারক দণ্ডপ্রাপ্তের স্বজনদের অবস্থান থেকে নিজেকে দেখবেন এবং দুঃখাহত হবেন। এক্ষেত্রে বিচার হবে যথার্থ বিচার। সুতরাং করুণা ও মানবতাবােধের সংমিশ্রণেই কেবল ত্রুটিমুক্ত বিচারসম্পন্ন হতে পারে। যে বিচারক দণ্ডদাতা হয়েও দণ্ডিতের জন্য সহানুভূতি বােধ করেন, তার জন্য ব্যথিত হন, তার বিচারই সর্বশ্রেষ্ঠ বিচার বলে পরিগণিত হয়।
মন্তব্য
অপরাধী যত বড়ােই হােক না কেন, বিচারককে দণ্ডিতের প্রতি সমবেদনার নিরিখে বিচারকার্য সম্পন্ন করা উচিত।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Great site . It has made my study much easier than before!