মূলভাব
যার প্রকৃত স্থান যেখানে তাকে সেখানে বিরাজ করাটাই মানানসই। এর ব্যত্যয় ঘটলে সমাজে বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়।
সম্প্রসারিত ভাব
মহামহিম স্রষ্টা পৃথিবীর ভারসাম্য ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে নানা ধরনের প্রাণী, গাছপালা, বন-বনানী পাহাড় পর্বত, নদী-নালা, খাল-বিল, সাগর-মহাসাগর সৃষ্টি করেছেন। সেই সাথে প্রতিটি বস্তূ ও প্রাণীর উপযােগী অবস্থান নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। এজন্যই আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ তাদের স্বদেশের পরিবেশে সুন্দর। কিন্তু শ্বেতাঙ্গ মানুষের দেশে তারা নিতান্তই অবাঞ্ছিত। কালেভদ্রে যদি কোনাে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ আমাদের দেশে এসে পড়ে, তাহলে তাকে কোনাে আশ্চর্যজনক প্রাণী বলে মনে হবে। অথচ এই কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের রূপ আফ্রিকা তথা নিজেদের দেশের পরিবেশে আত্মীয়-স্বজনের কেবল প্রশংসাই কুড়ায় না, বরং অপরিচিতদেরও মনােমুগ্ধ করে। তার কারণ, কৃষ্ণাঙ্গদের দৈহিক গঠন ও রং সেই দেশের পরিবেশের সাথে মিলপূর্ণ। আমাদের দেশের বন্য প্রকৃতির মধ্যেও যারা লালিত, পালিত, তারা তাদের নিজস্ব পরিবেশেই মানানসই। তাদের পাশে যদি শহরের সভ্য মানুষ এসে দাঁড়ায়, তাহলে তাদের সভ্য পােশাক ও আচার-ব্যবহার বন্য প্রকৃতির সঙ্গে নিতান্তই বেমানান মনে হবে। মানব শিশুর স্থান তার মায়ের কোলে। মায়ের কোলেই তাকে মানায়।
এ মানবশিশুকে যখন ধুলায় অবলুণ্ঠিত অবস্থায় দেখা যায়, তখন একটি বিজাতীয় বিতৃষ্ণায় প্রত্যেকের মন-প্রাণ বিষিয়ে ওঠে। আবার যখন তাকে তার মায়ের কোলে দেখা যায়, তখন তার সৌন্দর্য প্রত্যেককেই মুগ্ধ করে। ঠিক একইভাবে বনের প্রাণী বনেই সুন্দর, বনের বাইরে এদের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ক্ষুন্ন হয়। আসলে সৃষ্টিকর্তার সমুদয় সৃষ্টির মধ্যেই একটা মানানসই ও সামঞ্জস্যের বিষয় রয়েছে। সৃষ্টিকর্তা যাকে যেখানে থাকার উপযােগী করে সৃষ্টি করেছেন তাকে সেখানেই মানায়। সৃষ্টির এ অমােঘ নিয়ম লঙ্ঘন করে যদি কারাে নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত স্থান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় সেটি বেমানান হয়ে পড়ে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সেখানে টিকতে পারে না।
মন্তব্য
নির্দিষ্ট স্থান ও পরিবেশেই প্রকৃত শােভা বিকশিত হয়, অন্যত্র নয়। সুতরাং যাকে যেখানে রাখা উচিত বা যার যেখান থাকা উচিত তা হওয়াটাই একান্ত কাম্য।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।