বেঁচেও মরে যদি মানুষ দোষে,
মরেও বাঁচে যদি মানুষ ঘােষে।
বাংলা ভাবসম্প্রসারণ/pdf download
মূলভাব
কল্যাণকর কাজের মাধ্যমে মানুষ মৃত্যুর পরও মানব হৃদয়ে বেঁচে থাকে। কিন্তু মন্দ কাজ করার ফলে মানুষ বেঁচে থেকেও মানব হৃদয়ে স্থান পায় না।
সম্প্রসারিত ভাব
মানুষের জীবন দীর্ঘস্থায়ী নয়, বরং স্বল্প সময়ের সীমারেখায় আবদ্ধ। এ সময়ের মধ্যেই মানুষকে চেষ্টা করতে হয় মহাকালে টিকে থাকার। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষই আছে, যারা শুধু নিজেদের বেঁচে থাকাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তারা তাদের জীবদ্দশায় শুধু নিজেরাই সবকিছু উপভােগ করে যেতে চায়। তাদের ওপর অন্যদেরও যে দাবি বা প্রত্যাশা আছে, তা তারা স্বীকার করতে চায় না। এরা আসলে পশুতুল্য। পশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তারা খাদ্যদ্রব্য ভােগ কিংবা যৌনাকাঙক্ষা চরিতার্থ করার মানসে পরস্পর মারামারিতে লিপ্ত হয়। স্বীয় স্বার্থটাই তারা বড়াে করে দেখে। অন্যের স্বার্থের ব্যাপারে তথা নৈতিকতার ব্যাপারে তারা আদৌ মাথা ঘামায় না। পশুর ন্যায় এরাও ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে সর্বদা তৎপর থাকে। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ওরা মারামারি, হানাহানি এমনকি নরহত্যা পর্যন্ত করতে পারে। এদের মধ্যে নৈতিকতা, বিবেকবােধ, মানবতাবােধ বলে কিছুই নেই।
এসব ব্যক্তিদের ভক্তি-শ্রদ্ধা করা বা ভালােবাসা তাে দূরের কথা, সবাই এদেরকে ঘৃণা করে। আসলে এরা বেঁচে থেকেও মানব হৃদয়ে কোনাে স্থান পায় না। পক্ষান্তরে, সারাজীবন যারা শুধু নিজের কথা না ভেবে অন্যের কল্যাণের কথা ভাবে, তারাই সম্মানিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, সার্থক জীবন তাকেই বলে যে জীবন অন্যের দ্বারা অভিনন্দিত হয়, শ্রদ্ধা ও ভালােবাসায় সিক্ত হয়। হযরত মুহাম্মদ (সা), আইনস্টাইন, মাদার তেরেসা, মহাত্মা গান্ধী, এ. কে. ফজলুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অসংখ্য মহৎ ব্যক্তি মৃত্যুর পরও মানব হৃদয়ে চির অমর হয়ে আছেন। মানুষের মুখে তাদের মহত্তের কথা ঘােষিত হয়। আবার অসংখ্য মানুষ জীবিত থেকেও ঘৃণিত জীবনের গ্লানি বহন করে। মানুষের দ্বারা তারা নিন্দিত, লাঞ্ছিত হয়।
মন্তব্য
কাজের দ্বারা মানুষ চিরজীবী হয়; আবার কাজের দ্বারাই মানুষ ইহিতাসে ঘৃণিত হয়।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
