বনলতা সেন
জীবনান্দ দাশ
হাজার বছর ধ’রে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমূদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি, বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি, আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিলে নাটোরের বনলতা সেন।
চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য, অতিদূর সমুদ্রের ’পর
হাল ভেঙ্গে যে-নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখ দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে, বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে, ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল,
পৃথিবীর সব রং নিভে গেলে পান্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল,
সব পাখি ঘরে আসে- সব নদী- ফুরায় এ-জীবনের সব লেন দেন,
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।
[post_ads]
কবি পরিচিতিঃ
জন্ম: ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৯
জন্মস্থানঃ বরিশাল
মৃত্যু: ২২ অক্টোবর ১৯৫৪ (বয়স ৫৫)
মৃত্যুর কারণ: ট্রাম দুর্ঘটনায়
সমাধি: ভারত
অন্য নাম: মিলু
পিতা: সত্যানন্দ দাশগুপ্ত
মাতা: কুসুমকুমারী দাশ
[সুত্রঃ জীবনানন্দ দাশ – উইকিপিডিয়া ##fa-external-link##]
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
