ভাষণ

নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভাষণ, বক্তৃতা

4.5/5 - (12 votes)

নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে ভাষণ: প্রতিবছর ২৪ মে নজরুল জয়ন্তী উদযাপন করা হয়। এই দিন বিভিন্ন ভাষণ বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আজকে নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভাষণ ও বক্তৃতার একটি নমুনা দেওয়া হল।

নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই অনুষ্ঠানের মাননীয় সভাপতি, সম্মানিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, উপস্থিত রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যবৃন্দ এবং উপস্থিত সুধীমণ্ডলী সবার প্রতি রইল আমার শুভেচ্ছা ও সালাম ।

সুপ্রিয় সুধী, আজকের দিনটি এমন একটি দিন যে দিনে বন্দি মানবতার মুক্তির জয়গান গেয়ে বাংলার সাহিত্যগগনে উদিত হয়েছিল কাজী নজরুল ইসলাম নামের সূর্যের। বাঁশির টানের মধ্য দিয়ে নতুন জীবনকে মধুময় করে গড়ে তোলার এবং রণতূর্যের ঝংকারে সমাজের সকল অন্যায়, অসত্য, শোষণের শৃঙ্খল ভেঙে দিয়ে নতুন এক সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন। তাঁর লেখার জাদুস্পর্শে যৌবন ধর্ম নতুন রূপে সজীবতা ও প্রাণশক্তি ফিরে পেয়েছে। সম্মানিত সুধী, কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন মানবতার কবি, সাম্যের কবি। তিনি চেয়েছিলেন সমাজের সকল ভণ্ডামি-শোষণ ক্রিয়াকে নিষ্পেষিত করে এক সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। যেখানেই তিনি অন্যায় দেখেছেন, সেখানেই তিনি বিদ্রোহের বাণ নিক্ষেপ করেছেন। তিনি উচ্চারণ করেছেন-

লাথি মার ভাঙরে তালা যতসব বন্দিশালা
আগুন জ্বালা, আগুন জ্বালা । কাজী নজরুল ইসলাম

প্রিয় সুধীমণ্ডলী, কাজী নজরুল ইসলামের পুরো জীবনজুড়ে রয়েছে তাঁর মেধা ও মননের স্বাক্ষর। জীবনের প্রাথমিক পর্যায়েই তিনি সংগ্রামমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে জীবনকে উপলব্ধি করেছেন। লেটো গানের দলে তাঁর প্রথম প্রতিভার বিকাশ ঘটে। পরে ধীরে ধীরে তাঁর প্রতিভার স্ফুরণ ঘটতে থাকে। তিনি সমাজের অবিচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন এবং তাঁর বিভিন্ন সাহিত্যকর্মে তথা অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, সাম্যবাদী, রিক্তের বেদন প্রভৃতিতে এই চেতনার প্রকাশ ঘটতে থাকে। তিনি তাঁর রচনায় জীবনদর্শনের মধ্য দিয়ে বাংলার লালন-চণ্ডীদাসের সহজিয়া ধারাকেই ফুটিয়ে তুলেছেন।

সুপ্রিয় সুধী, নজরুল ছিলেন প্রেম ও সৌন্দর্যের কবি। সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা পরিহার করে তিনি হিন্দু-মুসলিম সবাইকে এক করে দেখতেন এবং তাঁর জীবনাচরণের মধ্য দিয়ে তার বাস্তব প্রতিফলন দেখিয়েছেন। হিন্দু-মুসলিম বিরোধকে নিয়ে তিনি কবিতায় বলেন-

হিন্দু না ওরা মুসলিম? এই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কাণ্ডারী বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মার। কাজী নজরুল ইসলাম

মোটকথা, তিনি সর্বত্র হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির জয়গান গেয়েছেন। পরিশেষে আমি বলতে চাই, নজরুল আমাদের মাঝে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার যে চেতনা রেখে গেছেন তার এখনো সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তাই আজ আবার আমাদের সবাইকে নতুন করে নজরুলের সমাজ গড়ার দৃপ্ত শপথ নিতে হবে। সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে নজরুলের চেতনা ও আদর্শ ।
সবাইকে ধন্যবাদ ।

Health Desk

সিনিয়র স্টাফ। স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা সমস্যা ও হেলথ টিপস নিয়ে নিয়মিত লিখছি। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button