ইসলাম ও জীবন

আধুনিক যুগের ঈমান পরিপন্থী কিছু ধ্যান-ধারণা

5/5 - (1 vote)

আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞানের উৎকর্ষের সাথে সাথে মানুষের ধ্যান ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল বর্তমানে আমরা এমন কিছু ধ্যান-ধারণা পোষণ করছি যা ঈমান পরিপন্থী।

১। জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মানা, জনগণকে আইনের উৎস মানা ঈমান-পরিপন্থী । কেননা ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসে আল্লাহকেই সর্বময় ক্ষমতার উৎস স্বীকার করা হয় এবং বিধান দেয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহর

২। প্রচলিত গণতন্ত্রে জনগণকেই সকল ক্ষমতার উৎস এবং জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরকে আইন বা বিধানের অথরিটি বলে স্বীকার করা হয়, তাই প্রচলিত গণতন্ত্র-এর ধারণা ঈমান-আকীদার পরিপন্থী ।

৩। সমাজতন্ত্রে নিখিল বিশ্বের কোন সৃষ্টিকর্তা বা খোদা আছে বলে স্বীকার করা হয় না, তাই নাস্তিকতা-নির্ভর এই সমাজতন্ত্রের মতবাদে বিশ্বাস করা ঈমান-আকীদা পরিপন্থী।

৪। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদি তন্ত্রমন্ত্রকে মুক্তির পথ মনে করা এবং একথা বলা যে, ইসলাম সেকেলে মতবাদ, এর দ্বারা বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের এই যুগে উন্নতি অগ্রগতি সম্ভব নয়- এটা কুফরি।

৫। “ধর্ম নিরপেক্ষতা”-এর অর্থ যদি হয় কোনো ধর্মে না থাকা, কোনো ধর্মের পক্ষ অবলম্বন না করা, কোনো ধর্মকে সমর্থন দিতে না পারা, তাহলে এটা কুফরি মতবাদ । কেননা ইসলাম ধর্মে থাকতেই হবে, ইসলামের পক্ষ অবলম্বন করতেই হবে, ইসলামী কার্যক্রমকে সমর্থন দিতেই হবে । আর যদি ধর্মনরিপেক্ষতার অর্থ হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত না করা, তাহলে সে ধারণাও ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী । কেননা, ইসলামী আকীদা বিশ্বাসে ক্ষমতা ও সামর্থ্য থাকলে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা ফরয । আর কোন ফরযকে আস্বীকার করা কুফরি । যদি ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ শুধু এতটুকু হয় যে, সকল ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম-কর্ম পালন করতে পারবে, জোর জবরদস্তী কাউকে অন্য ধর্মে প্রবেশ করানো যাবে না, তাহলে এতটুকু ধারণা ইসলাম-পরিপন্থী হবে না ।

৬। ডারউইন-এর বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করা ফুফরি অর্থাৎ, একথা বিশ্বাস করা যে, বিবর্তন অনুযায়ী ক্রমান্বয়ে পরিবর্তন হতে হতে এক পর্যায়ে বানর থেকে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে । এরূপ বিশ্বাস ইসলাম ও ঈমান পরিপন্থী । ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসে আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে সর্বপ্রথম হযরত আদম (আ.)কে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর থেকেই মনুষ্য জাতির বিস্তৃতি ঘটেছে ।

৭। ইসলাম মসজিদের ভিতর সীমাবদ্ধ থাকবে, ইসলাম ব্যক্তিগত ব্যাপার, ব্যক্তিগত জীবনে এটাকে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, সমাজ বা রাষ্ট্রীয় জীবনে এটাকে টেনে আনা যাবে না- এরূপ বিশ্বাস করা কুফরি। কেননা, এভাবে ইসলামের ব্যাপকতাকে অস্বীকার করা হয় । ইসলামী আকীদা-বিশ্বাস অনুযায়ী কুরআন-হাদীসে তথা ইসলামে মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় যাবতীয় ক্ষেত্রের সকল বিষয়ে শাশ্বত সুন্দর দিক-নির্দেশনা রয়েছে ।

৮। নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, পর্দা করা ইত্যাদি ফরযসমূহকে ফরয তথা অত্যাবশ্যকীয় জরুরি মনে না করা এবং গান, বাদ্য, সুদ, ঘুষ ইত্যাদি হারামসমূহকে হারাম মনে না করা এবং এগুলোকে মৌলভীদের বাড়াবাড়ি বলে আখ্যায়িত করা কুফরি । কেননা কোনো ফরযকে ফরয বলে অস্বীকার করা বা কোনো হারামকে জায়েয মনে করা কুফরি ।

৯। টুপি, দাড়ি, পাগড়ী, মসজিদ, মাদ্রাসা, আলেম মৌলভী ইত্যাদিকে তুচ্ছ জ্ঞান করা, এগুলোকে হেয় দৃষ্টিতে দেখা, এগুলো নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা মারাত্মক গোমরাহী । ইসলামের কোন বিষয় –তা যত সামান্যই হোক— তা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যায় ।

১০। আধুনিক কালের নব্য শিক্ষিতদের কেউ কেউ মনে করেন যে, কেবল মাত্র ইসলমই নয়- হিন্দু, খৃষ্টান, ইয়াহুদী, বৌদ্ধ নির্বিশেষে যেকোনো ধর্মে থেকে মানবতা, মানব সেবা, পরোপকার প্রভৃতি ভাল কাজ করলে পরকালে মুক্তি হবে- এরূপ বিশ্বাস করা কুফরি । একমাত্র ইসলাম ধর্ম অনুসরণের মধ্যেই পরকালীন মুক্তি নিহিত- একথায় বিশ্বাস রাখা ঈমানের জন্য জরুরি।

Health Desk

সিনিয়র স্টাফ। স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা সমস্যা ও হেলথ টিপস নিয়ে নিয়মিত লিখছি। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button