সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণকে ঘিরে আমাদের দেশে অনেক কুসংস্কার প্রচলিত আছে। যেমন অনেকে মনে করেন যে গর্ববতী মায়েদের জন্য সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের সময় কোন কিছু কাটাকাটি করা উচিত নয় (মাছ, তরকারি, ফলমূল ইত্যাদি)। এগুলো যদি কাটেন তাহলে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হয়। এ ধরণের ধারণার কোন অস্তিত্ব নেই। এটি একটি কুসংস্কার। কুরআন ও হাদিসে এই ধরণের কথার কোন উল্লেখ নেই বিধায় এটির কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই।
একজন ইমানদার কখনো কুসংস্কারে নিমজ্জিত হতে পারেন না। এই ধারণা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। সূর্য গ্রহণের সময় গর্ববতী মায়েরা স্বাভাবিক কাজ কাটাকুটি সব কিছুই করতে পারেন।
সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণের সময় নবী করীম (সঃ) এর মৌলিক নির্দেশনা হল এই সময় সসজিদে সালাতের আয়োজন করা। এই সময় দান-সদকা করা, দোয়া করা। তাকবির দেওয়া (আল্লাহু আকবর)।
মূলত জাহেলি যুগের লোকেরা মনে করত যে, মহান কোন বেক্তির মৃত্যু বা বড় কোন অঘটন ঘটলে সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্র গ্রহণ হয়। নবী করীম (সঃ) তাদের সেই কুসংস্কারকে দূর করেছিলেন।
রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ
“চন্দ্র এবং সূর্য এ দুটি আল্লাহর নিদর্শনের অন্যতম। কারও জন্ম বা মৃত্যুর কারণে এদের গ্রহন হয় না। তাই তোমরা যখন প্রথম গ্রহণ দেখতে পাও, তখন আল্লাহকে স্মরণ কর।”
[সহিহ বুখারী ৪৮১৮; ইফা]
অন্য বর্ণনায় রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ
“চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণ কারও জন্ম বা মৃত্যুর কারণে লাগেনা বরং এদুটো আল্লাহর নিদর্শন, যা দ্বারা আল্লাহ তাঁর বান্দাকে সতর্ক করেন। অতএব তোমরা যখন গ্রহণ লাগতে দেখ, আল্লাহর জিকিরে মশগুল হও যতক্ষণ তা আলোকিত না হয়ে যায়।” [সহীহ মুসলিম ১৯৭২; ইফা]
আমাদের উচিত যা কিছু কুরআন ও রাসূল (সাঃ) এর সহীহ হাদিসে রয়েছে সে সম্পর্কে জানা ও সে অনুযায়ী আমল করা। এবং সমাজের প্রচলিত কুসংস্কার থেকে মুক্ত থাকা।
আল্লাহ যেন আমাদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন এবং আমাদেরকে রাসূল (সাঃ) এর দেওয়া শিক্ষাকে দৃঢ় ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকতে সাহায্য করেন। আমীন।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।