হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাহা বলিয়াছেন বা নিজে করিয়াছেন অথবা সাহাবায়ে কেরামদেরকে করিতে দেখিয়া নিষেধ করেন নাই, তাহাই হাদীস। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) অসংখ্য হাদিস আমাদের মাঝে রেখে গেছেন। এই অসংখ্য হাদিসের মধ্য থেকে ৬৫ টি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস সম্পর্কে আমরা জানবো। ইনশাআল্লাহ্।
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর ৬৫ টি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস
১. তােমার ঈমানকে খাঁটি কর, অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হইবে।
২. তােমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি, যে কুরআন মাজীদ শিক্ষা করে এবং শিক্ষা দেয়।
৩. (দ্বীনি) ইলম তলব করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয।
৪. পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।
৫. নামায বেহেশতের চাবি।
৬. কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাযেরই হিসাব হইবে ।
৭. তােমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ছােট ব্যক্তি হইতে আমার মর্তবা যত বড়, (বে-ইলম) আবেদের চেয়ে একজন (খাটি) আলেমের মর্তবা তত বড়।
৮. দু’আই ইবাদত।
৯. যে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার নিকট দু’আ করে না; আল্লাহ তা’আলা তাহার উপর রাগান্বিত হন।
১০. আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তির উপর রহম করেন না, যে মানুষের উপর রহম করে না।
১১. খাঁটি মুসলমান ঐ ব্যক্তি, যাহার হাত ও মুখ হইতে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে।
১২. দুনিয়ার মুহাব্বাত সমস্ত গুনাহের মূল।
১৩. শেষ আমলই নির্ভরযােগ্য।
১৪. ঈমানদারদের জন্য মৃত্যু উপহারস্বরূপ।
১৫. যাহা শুনে তাহাই বলিতে থাকা, কোন ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য ইহাই যথেষ্ট।
১৬. হারাম ভক্ষণকারীর শরীর বেহেশতে প্রবেশ করিবে না।
১৭. আমার পক্ষ হইতে একটি বাণী হইলেও পৌঁছাইয়া দাও ।
১৮. যে চুপ থাকে সে নাজাত পায়।
১৯. সমস্ত কাজই নিয়তের উপর নির্ভর করে।
২০. আত্মীয়তা ছিন্নকারী বেহেশতে প্রবেশ করিবে না।
২১. যুলুম কিয়ামতের দিন ভীষণ অন্ধকার হইয়া দেখা দিবে।
২২. প্রকৃত ধনী আত্মার ধনী।
২৩. প্রত্যেক বিদআত গুমরাহী বা পথভ্রষ্টতা।
২৪. চাচা বাপের মত।
২৫. চোগলখোর (পরোক্ষ নিন্দাকারী) বেহেশতে প্রবেশ করিবে না।
২৬. মুসলমান মুসলমানের ভাই।
২৭. আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে প্রিয় জায়গা মসজিদ এবং সবচেয়ে খারাপ জায়গা বাজার।
২৮. হিংসা হইতে দূরে থাক। কেননা হিংসা নেকীকে ধ্বংস করিয়া দেয়। যেমন আগুন শুকনা কাঠকে।
২৯. তােমরা অধিক পরিমাণে মৃত্যুকে স্মরণ কর। কেননা মৃত্যু দুনিয়ার স্বাদকে ধ্বংস করিয়া দেয়।
৩০. ঐ ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না, যেই ঘরে কুকুর বা জীবজন্তুর ছবি থাকে।
৩১. টাখনুর নিচের যেই অংশ পায়জামা বা লুঙ্গি দ্বারা ঢাকা থাকে, তাহা দোযখে যাইবে ।
৩২. ছবি বানানাে ওয়ালাগণ আল্লাহ তাআলার নিকট ভীষণ শাস্তি ভােগ করিবে।
৩৩. আমিই শেষ নবী, আমার পরে আর কোন নবী আসিবে না।
৩৪. যেই ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ গােপন রাখিবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখেরাতে তাহার দোষ গােপন রাখিবেন।
৩৫. কবরকে সিজদা করিও না।
৩৬. দুনিয়াতে এমনিভাবে থাকো, যেমন কোন মুসাফির বা পথিক থাকে।
৩৭. আলেমগণই পয়গম্বরগণের ওয়ারিস (উত্তরসূরী)।
৩৮. যেই ব্যক্তি কোন ভাল কাজের পথ দেখায়, সে ঐ ভাল কাজ করার মত সওয়াব পায়।
৩৯. চোখের যেনা হইল, দেখা।
৪০. যে নম্রতা হইতে বঞ্চিত, সে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত।
৪১. ঐ ব্যক্তি বীর নয়, যে লােকদেরকে ভূ-লুণ্ঠিত করে, বরং বীর ঐব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করিতে পারে।
৪২. যদি তােমার লজ্জা না থাকে, তাহা হইলে যাহা ইচ্ছা তাহাই করিতে পার।
৪৩. আল্লাহ তা’আলার নিকট ঐ আমল সবচেয়ে বেশী প্রিয়, যাহা সদা সর্বদা করা হয়, যদিও তাহা অল্প হয় ।
৪৪. তােমাদের মধ্যে আমার নিকট ঐ ব্যক্তি বেশী প্রিয়, যে বেশী চরিত্রবান।
৪৫. দুনিয়া মুসলমানদের জন্য কয়েদখানা এবং কাফেরদের জন্য বেহেশতখানা।
৪৬. কোন ব্যক্তির জন্য তাহার অন্য কোন ভাইয়ের সহিত তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন করিয়া থাকা জায়েয নাই।
৪৭. কোন মুমিন একই গর্তে দুইবার দংশিত হয় না।
৪৮. ঐ ব্যক্তি সফল, যিনি ইসলাম গ্রহণ করিয়াছেন এবং পরিমাণ মত তাঁহার রিযিক মিলিয়াছে। আর আল্লাহ তাআলা তাহাকে তাহার রুজীর মধ্যে সন্তুষ্টি দান করিয়াছেন।
৪৯. তােমাদের কেহ ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকৃত মুমিন হইতে পারিবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের ভাইয়ের জন্য ঐ জিনিস পছন্দ না করিবে, যাহা সে নিজে পছন্দ করে।
৫০. ঐ ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করিতে পারিবে না, যাহার প্রতিবেশী তাহার অত্যাচার হইতে নিরাপদ নয়।
৫১. পরস্পর দুশমনি করিও না। পরস্পর হিংসাপােষণ করিও না। একে অন্যের ছিদ্রান্বেষণ করিও না। আল্লাহ তাআলার বান্দাহ্ সকলেই ভাই ভাই হইয়া যাও।
৫২. ইসলাম ঐ সমস্ত গুনাহসমূহ নিশ্চিহ্ন করিয়াদেয়, যাহা ইসলামের পূর্বে করা হইয়াছে। হিজরত ঐ সমস্ত গুনাহসমূহ নিশ্চিহ্ন করিয়া দেয়, যাহা হিজরতের পূর্বে করা হইয়াছে এবং হজ্ব ঐ সমস্ত গুনাহসমূহ নিশ্চিহ্ন করিয়া দেয়, যাহা হজ্বের পূর্বে করা হইয়াছে।
৫৩. বিবাদ সৃষ্টিকারী ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে বেশী ঘৃণিত।
৫৪. কবীরা গুনাহ হইল, আল্লাহ তাআলার সহিত কাহাকেও শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, অন্যায়ভাবে কাহাকেও হত্যা করা এবং মিথ্যা সাক্ষী দেওয়া।
৫৫. (নামাযের) কাতার সােজা কর, নতুবা আল্লাহ তাআলা তােমাদের চেহারা পরিবর্তন করিয়া দিবেন।
৫৬. যেই ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন মুসলমানের মুসীবত দূর করিবে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তাহার মুসীবত দুর করিবেন। যেই ব্যক্তি কোন গরীব লােকের প্রতি অনুগ্রহ করিবে আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তাহার উপর অনুগ্রহ করিবেন। যেই ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ গােপন রাখিবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তাহার দোষ গােপন রাখিবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দাহ্ তাহার কোন মুসলমান ভাইয়ের সাহায্যে লাগিয়া থাকিবে, আল্লাহ তাআলা তাহার সাহায্যে লাগিয়া থাকিবেন।
৫৭. যেই ব্যক্তি একবার আমার উপর দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তাহার উপর দশবার রহমত পাঠান।
৫৮. যেই ব্যক্তি ইলমে দ্বীন শিক্ষার উদ্দেশ্যে কিছু পথ অতিক্রম করিবে, তাহার ঐ পথ অতিক্রম করার দ্বারা আল্লাহ তা’আলা তাহার জন্য বেহেশতের পথ সহজ করিয়া দিবেন।
৫৯. তােমরা ফরয এবং কুরআন মাজীদ শিক্ষা কর এবং লােকদিগকে শিক্ষা দাও, আমি চিরকাল থাকিব না ।
৬০. মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসেকী এবং হত্যা করা কুফুরী।
৬১. দুনিয়ার (মােহ) হইতে পরহেজ কর। তাহা হইলে আল্লাহ তা’আলা ভালবাসিবেন। আর মানুষের নিকটে যাহা আছে তাহা হইতে পরহেজ কর তবে তােমাকে মানুষ ভালবাসিবে।
৬২. মুমিনদের মধ্যে পরিপূর্ণ ঈমানদার ঐ ব্যক্তি, যিনি অধিক চরিত্রবান।
৬৩. যে স্ত্রীলােক পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করিবে এবং রমযান মাসের রােযা রাখিবে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করিবে, এবং স্বামীর এতাআত করিবে, তবে সে বেহেশতের যে কোন দরজায় ইচ্ছা প্রবেশ করিতে পারিবে । (জান্নাতের আটটি দরজার যে কোন দরজা দিয়া বিনা দ্বিধায় প্রবেশ করিতে পারিবে ।)।
৬৪. যেই স্ত্রীলােকের মৃত্যু এমনাবস্থায় হইবে যে, তাহার স্বামী তাহার উপর সন্তুষ্ট ছিলেন, সে বেহেশতী।
৬৫. যেই ব্যক্তি বিনা ওজরে দুই ওয়াক্ত নামাযকে একত্রে আদায়, করে, সে কবীরা গুনাহের দরজাসমূহের একটিতে পদার্পণ করিল ।
আশা করি লিখাটি পরে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।