
মাদকাসক্তি ও আমাদের যুবসমাজ রচনা
প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমারা অনেকেই মাদকাসক্তি ও আমাদের যুবসমাজ রচনার জন্য অনুরোধ করেছিলে। তাছাড়া এই রচনাটি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রায় আসে। তাই রচনাটি বিভিন্ন বই থেকে পয়েন্ট সংগ্রহ করে সহজ ভাষায় লেখা হয়েছে। আশা করি তোমাদের উপকারে আসবে।
মাদকাসক্তি ও আমাদের যুবসমাজ রচনার পয়েন্ট
ভূমিকা, মাদকাসক্তি কী? মাদকদ্রব্য কী?, মাদকদ্রব্যের প্রকারভেদ, মাদকদ্রব্যের উৎস, মাদকদ্রব্যের ব্যাবহার পদ্ধতি, মাদকাসক্তির কারণ, মাদকাসক্তির লক্ষণ, মাদকাসক্তির কুফল, মাদকাসক্তির প্রভাব, মাদকের নেশা দ্রুত প্রসারের কারণ, বিশ্বব্যাপী মাদকদ্রব্যের ব্যবহার ও প্রতিক্রিয়া, বাংলাদেশে মাদকের বর্তমান পরিস্থিতি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের উপায়, মাদকাসক্তির প্রতিকার ও বাংলাদেশ, উপসংহার
ভূমিকা
বর্তমানে সমাজ ও দেশের জন্য মাদকাসক্তি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদকের নীল নেশা আজ তার বিশাল থাবা বিস্তার করে চলেছে এ দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। এ এক তীব্র নেশা। হাজার হাজার তরুণ এ নেশায় আসক্ত। এ মরণনেশা থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করা না গেলে এ হতভাগ্য জাতির পুনরুত্থানের স্বপ্ন অচিরেই ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য অংশ আজ এক সর্বনাশা মরণনেশার শিকার। যে তারুণ্যের ঐতিহ্য রয়েছে সংগ্রামের, প্রতিবাদের, যুদ্ধ জয়ের, আজ তারা নিঃস্ব হচ্ছে মরণনেশার করাল ছোবলে। মাদক নেশার যন্ত্রনায় ধুঁকছে শত-সহস্র তরুণ প্রাণ। ঘরে ঘরে সৃষ্টি হচ্ছে হতাশা। ভাবিত হচ্ছে সমাজ। তাই অচিরেই এই মাদকাসক্তির কারণ উদ্ঘাটন করে এর প্রতিকার করতে হবে।
মাদকাসক্তি কী?
মাদকাসক্তি একটি স্নায়বিক ক্রিয়া। এর প্রভাবে ব্যক্তির চিন্তা-চেতনা ও আচার-আচরণে অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্তি যুব সম্প্রদায়ের এক আদিম প্রবণতা। শাব্দিক অর্থে মাদকাসক্তি বলতে ড্রাগ বা মাদকদ্রব্যের প্রতি এক প্রবল আকর্ষণকে বোঝায়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, নেশা এমন একটি মানসিক বা শারীরিক অবস্থা, যার সৃষ্টি হয়েছে জীবিত প্রাণী ও মাদক ওষুধের মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে।
মাদকদ্রব্য কী?
মাদক শব্দের অর্থ হল – মত্ততা জন্মায় এমন দ্রব্য। অর্থাৎ নেশা সৃষ্টিকারী দ্রব্যকেই মাদকদ্রব্য বলে। মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে স্নায়বিক বৈকল্য দেখা দেয় ও বারবার ওই দ্রব্য গ্রহণের প্রতি আসক্তি সৃষ্টি হয়। মাদকদ্রব্য গ্রহণের মাধ্যমেই কেবল এ আসক্তি প্রশমিত হয়। অন্যথায় শরীরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) মাদকদ্রব্য সম্পর্কে মন্তব্য করেছেনঃ
নেশা জাতীয় যেকোন দ্রব্যই মদ, আর যাবতীয় মদই হারাম।
সকল প্রকার নেশা জাতীয় দ্রব্য হারাম হওয়া সত্ত্বেও এসব দ্রব্যসামগ্রীর প্রতি মানুষের আকর্ষণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ‘মাদকাসক্তি হচ্ছে চিকিৎসা গ্রহণযোগ্য নয় এমন দ্রব্য অতিরিক্ত পরিমাণে ক্রমাগত বিক্ষিপ্তভাবে গ্রহণ করা এবং এসব দ্রব্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া’।