কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে,
দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে?
মূলভাব
এ ধরার বুকে সুখ লাভ করতে হলে অবশ্যই দুঃখকে জয় করতে হয়। দুঃখকে জয় করতে না পারলে সুখ লাভ অসম্ভব।
সম্প্রসারিত ভাব
জগতে সুখ ও দুঃখ পাশাপাশি অবস্থান করে। সকল মানুষই নিরবচ্ছিন্ন সুখ লাভের প্রত্যাশী। কেউ দুঃখ চায় না। কিন্তু রাতের পরে যেমন দিন আসে, তেমনই দুঃখের পরেই সুখ আসে। সুখ পেতে হলে দুঃখকে জয় করতে হয়। দুঃখকষ্ট ছাড়া সুখের কথা কল্পনাও করা যায় না। দুঃখের দহন সহ্য করার পরেই কেবল সুখের আস্বাদ লাভ করা যায়। অতএব, সাধনা ব্যতীত সিদ্ধি লাভ করার বিকল্প নেই। পথিক যদি দীর্ঘ পথের দিকে চেয়ে নিরাশ হয়ে যায়, তাহলে তার পক্ষে সে পথ অতিক্রম করা সম্ভব হয় না। গােলাপের ডাল কাঁটায় পরিপূর্ণ। এজন্য গােলাপ তুলতে গিয়ে কাঁটার আঘাতে হাত ক্ষতবিক্ষত হওয়ার মানসিক প্রস্তূতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কাঁটার আঘাতে রক্তাক্ত হওয়ার আশঙ্কায় পিছিয়ে গেলে সুন্দর ফুল প্রাপ্তির আনন্দ লাভ থেকে তাকে বঞ্চিত হতে হবে।
এ পৃথিবীতে বিনা ক্লেশে বা বিনা বাধায় কোনাে সৎকার্য সাধন করা যায় না। কোনাে কাজে নেমে প্রথমবারেই সফলতা আসবে এমন কোনাে নিশ্চয়তা নেই। সুতরাং একবার না পারলে শতবার চেষ্টা করতে হয়। সুখ বা আনন্দ লাভের জন্য প্রত্যেককেই অনেক দুঃখকষ্ট সহ্য করতে হয়। ঝড়-ঝঞা, দুঃখকষ্ট দেখে পিছিয়ে গেলে কোনাে কাজেই সাফল্য আসে না। দুঃখের মতাে এত বড়ো পরশপাথর পৃথিবীতে আর নেই। চেষ্টা-চরিত্রের মাধ্যমে অনেক অসাধ্য সাধন করা যায়। ধৈর্য ধরে কাজ করলে সফলতা আসবেই। কাঁটার আঘাত সহ্য করা ছাড়া যেমন ফুল সংগ্রহ করা যায় না; তেমনই দুঃখভােগ ছাড়া সুখ অর্জন করা অসম্ভব।
মন্তব্য
সাফল্য অর্জনের জন্য সকল বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে। দুঃখকে সাদরে বরণ করে নিতে হবে। তবেই তাে জীবনে সুখ ও সাফল্য আসবে।
এই ভাবসম্প্রসারণ কোন ক্লাসের, কোন বইয়ের
বিভিন্ন বই থেকে লিখা। সকল শ্রেণির জন্য।