এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন |
মনে কর, তুমি বিল্লাল খান। তােমার এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন লেখ।
অথবা, তােমার এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
নরসিংদী জেলার শিবপুর একটি অন্যতম উপজেলা। অতীত খ্যাতি ম্লান করে দিয়ে উপজেলাটি বর্তমানে কুখ্যাত হয়ে উঠেছে। কেননা এখানকার বিভিন্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযােগ গ্রহণ করছে একদল স্বার্থান্বেষী মানুষ, যার ফলে সমাজের সাধারণ কিছু মানুষ চরম দুর্ভোগ পােহাচ্ছে।
এ এলাকায় আগে মানুষ রাতে দরজা-জানালা লাগাতে ভুলে গেলেও ঘর-বাড়ি থেকে কোনাে কিছু চুরি হতাে না। কিন্তু ইদানীং থানা পুলিশের গাফিলতি, স্থানীয় কতিপয় অসাধু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রভাবে খারাপ মানুষের আনাগােনা বেড়েছে। এরা এলাকায় একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এসব অপকর্মের মধ্যে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি এমনকি হত্যার মতাে জঘন্য ঘটনাও ঘটছে, যার কারণে এলাকার মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। শিবপুরে যেভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে, তাতে ধারণা করা যায় সন্ত্রাসীদের দাপটে সাধারণ মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হবে। কেননা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযােগ থাকা সত্ত্বেও থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।
কখনাে যদি মামলা গ্রহণ করে তাহলে মামলাকারীকে মামলা খারিজ করতে চাপ প্রয়ােগসহ প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়। ফলে সাধারণ নিরীহ মানুষ অন্যায়ের কোনাে বিচার পাচ্ছে না। সন্ত্রাসীদের উৎপাতে এলাকার মেয়েরা স্কুল-কলেজে যেতে পারে না। তারা দলবেঁধে রাস্তায় ঘােরাফেরা করে, সুযােগ বুঝে ছিনতাই করে। আবার এসব সুযােগ না পেলে দেখা যায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। যার জন্য অনেক মেয়েই উপায়ান্তর না দেখে স্কুল-কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। গত মাসে গ্রামে একটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে ছাড়া পেয়ে গ্রামটিকে একেবারে তছনছ করে দিয়েছে। আসামিরা প্রশাসনের সামনে দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তবুও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে অতীতের শান্তিপূর্ণ এ এলাকাটি অচিরেই একটি অশান্তির আখড়া হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এ অবস্থায় এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য এলাকাবাসী মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সদয় দৃষ্টি কামনা করছে যেন প্রশাসনে চাপ প্রয়ােগের মাধ্যমে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এলাকাটিতে জরুরি ভিত্তিতে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করছে।